দিল্লিতে মোদি-মমতা বৈঠক

প্রকাশিত: ৮:৫৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯

শ্যামলী নিউজ ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠক করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বুধবার বিকালে দিল্লিতে মোদির বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলেন মমতা। গতকাল মঙ্গলবার মোদির জন্মদিনের একদিন পর কুর্তা ও মিষ্টি নিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় আধা ঘন্টার বেশি সময় ধরে রাজ্যের বিভিন্ন দাবিদাওয়া, বাংলার নাম পরিবর্তন সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় দুই জনের মধ্যে। রাজ্যে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াতও দেন মমতা। 

তবে, এদিনের আলোচনায় স্থান পায়নি জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বা তিস্তা পানি বন্টনের মতো স্পর্শকাতার ইস্যু। দুই রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর বৈঠকের সেই ছবি প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে ট্যুইট করা করা হয়। অন্যদিকে, বৈঠক শেষে বাইরে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের মমতা নিজেই জানান বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়েছে। তবে এটা কোন রাজনৈতিক বৈঠক নয়, এক সরকারের সাথে আরেক সরকারের আলোচনা। মমতা জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর সাথে যে আলোচনা ছিল, তা খুব ভাল আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আমার আসা হয়নি, শপথগ্রহণে আসব বলে আমি ঠিকও করেছিলাম কিন্তু কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে আমি আসতে পারিনি। কিন্তু তিনি এখন দ্বিতীয় বারের জন্য সরকারে এসেছেন। আমি আমার রাজ্যের যে দাবি-দাওয়া আছে সেটা দিয়ে গেলাম। প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি রুপি আমরা কেন্দ্রের কাছে পাই সেটা প্রধানমন্ত্রীকে জানালাম। তেমনি দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের রাজ্যের নামকরণর বিষয়টিও পড়ে রয়েছে। ‘বাংলা’ শব্দকে সামনে রেখে আমাদের রাজ্যের নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের যদি কোন অতিরিক্ত শব্দ প্রয়োগের প্রস্তাবও থাকে সেটা আমাদের জানাতে পারে। সেক্ষেত্রে তা গ্রহণ করতেও আমার কোন সমস্যা নেই। আমরা ইতিমধ্যেই বিধানসভায় দুই-তিনবার প্রস্তাব পাশ করেছি। এর সাথে মানুষের ভাবাবেগ জড়িয়ে আছে।’ 

মমতা আরও বলেন, ‘প্রায় ১২ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোল ব্লক ‘দেউচা-পাচমি কোল ব্লক’র  উদ্বোধনে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। দুর্গাপূজা উৎসবের পর প্রধানমন্ত্রীর সুবিধামতো সময় দেখে আমরা এর উদ্বোধন করতে চাইছি। পাশাপাশি একাধিক কেন্দ্র্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থার বিলগ্নিকরণ, ব্যাংক সংযুক্তিকরণসহ কয়েকটি বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় এদিনের বৈঠকে।’ 

এনআরসি নিয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘এনআরসি নিয়ে আজকে কোন কথা হয়নি। এনআরসি আসামের বিষয়। আসাম চুক্তি মোতাবেক ওই রাজ্যে এনআরসি চালু করা হয়েছে। এটা দেশের অন্য রাজ্যের বিষয় নয়। বাংলায় এনআরসি চালুর কোন প্রস্তাব নেই এবং আমরাও তা করতে দেবো না।’ 

বাংলাদেশের সাথে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কোন আলোচনা হয়েছে কি না সেই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘তিস্তা নিয়েও আমাকে কিছু বলা হয়নি। ওরা আমাকে কিছু বলেনি।’

এসময় তিনি জানান, এটা কোন রাজনৈতিক বৈঠক নয়, এটা সম্পূর্ণ ভাবে দুইটি সরকারের মধ্যেকার বৈঠক। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সাথে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছি, তিনি যদি সময় দেন তবে বৃহস্পতিবার তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতে পারি।