জামালপুরে যৌন আক্রমণের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি

প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৭, ২০১৯

জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে একের পর এক ধর্ষণসহ পাশবিক যৌন আক্রমণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ৬ অক্টোবর দুপুরে জামালপুর জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও জেলা শিশু কল্যাণ কমিটি জামালপুর।

জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। স্মারকলিপি পাঠ করেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জামালপুর জেলার শাখার সভাপতি ও শিশু কল্যাণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম।

স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন নারী, শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এধরনের অমানবিক ঘটনায় কোনো জনপ্রতিনিধি বা অন্য যে কেউ আপোস মীমাংসার চেষ্টা করলে তাকেও আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দেন তিনি।

জামালপুরে চলমান যৌন আক্রমণ থেকে মা, বোন, কন্যাদের রক্ষা করতে জেলা প্রশাসকের কাছে দশটি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- মামলার সাথে যুক্ত ধর্ষকদের তালিকা প্রকাশ এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা যারা আপোস করার চেষ্টা করবেন তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রতিটি মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় নেতাদের এ বিষয়ে ধর্মীয় ব্যাখ্যাসহ আলোচনা করতে হবে। ১৮ বছর বয়সী কারো কাছে মুঠোফোন পাওয়া গেলে তা ছিনিয়ে নিতে হবে। এ ব্যাপারে বাবা-মাকে জবাবদিহি করতে হবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসেম্বলির সময় উদ্বুদ্ধমূলক আলোচনা করতে হবে। প্রচলিত আইন সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে।

স্মারকলিপি পাঠ করেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জেলার শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম।

যৌন হয়ারানি নির্মূলকরণে জেলা ও উপজেলাভিত্তিক মনিটরিং সেল গঠন ও ক্লোজ মনিটরিং করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে যৌন আক্রমণের শিকার নারী ও শিশুকে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে। দুর্নীতি ও প্রভাবান্বিত হবার কোনো তথ্য পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারীর বিরুদ্ধে দ্রুত বিভাগীয় ও আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। সহজলভ্য যৌনতার অ্যাপস বা অপশনগুলো বন্ধ করতে হবে। প্রযুক্তির অপব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। যৌন নির্যাতনের জন্য বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে, ছাত্রীদের যাতায়াতের সময় বিভিন্ন মোড়সহ বিভিন্ন চিহ্নিত এলাকাসমূহে পুলিশি টহল বাড়াতে হবে।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ বাছির উদ্দিন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, স্থানীয় সরকারের উপরিচালক মোহাম্মদ কবীর উদ্দিন, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জামালপুর জেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সরকার, তরঙ্গ মহিলা কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শামীমা খান, উন্নয়ন সংঘের আইআইআরসিসিএল প্রকল্পের সমাজ কর্মী আরজু মিয়া, ডিএইচআরএনএস প্রকল্পের কর্মকর্তা সাব্বির হোসেন রিয়াদ, বিশিষ্ট রাজনীতিক মোজাহারুল হক, অপরাজেয় বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক আশরাফুল হক, সংস্কৃতিকর্মী ফারজানা ইসলাম, সাংবাদিক মোস্তফা মনজু, সৈয়দ শওকত জামান, জামালপুর সমিতির সভাপতি সান সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।