চার্জশিট নির্ভুল, আশা করি শিগগিরই বিচার হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৩:৪৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০১৯

শ্যামলী নিউজ ডেস্ক : বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আদালতে দাখিল করা চার্জশিট ‘নির্ভুল’ দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘শিগগিরই এর বিচার হবে, আমরাও এটা আশা করছি।’

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

আবরার হত্যার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ, আশা করছি দ্রুত বিচার হবে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারের বিষয়টি পুলিশের আন্ডারে নয়। এটা আদালত করবেন। আমরা আগেই বলেছি যে, আমরা একটা নির্ভুল চার্জশিট দেয়ার জন্য প্রচেষ্টা নিব। আমরা আশা করি, তদন্ত সংস্থা পুলিশ বাহিনীর মাধ্যমে যে চার্জশিটটি গিয়েছে, নির্ভুল চার্জশিট গিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শিগগিরই এর বিচার হবে, এটা আমরাও আশা করছি।’

আবরার হত্যায় জড়িত কয়েকজন আসামি পলাতক আছে, তাদের ধরা হয়নি- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ধরা হয়নি বলবেন না। বলবেন, তারা পলাতক। প্রচেষ্টা চলছে, ধরা পড়ে যাবে।’

আসামিরা কী ভারতে চলে গেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তথ্য থাকলে তো আমরা ধরে ফেলতাম। তথ্য তো অনুসন্ধানের… আপনার কাছে তথ্য থাকলে আমাদের জানাবেন। তবে বাইরে বের হওয়ার কোনো স্কোপ নেই। কোনোখানে, কারও আশ্রয়-প্রশ্রয়ে হয়তো আছে, আমরা ধরে ফেলব।’

গত ৬ অক্টোবর দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের নিচতলা থেকে বুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফেসবুকে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতারা আবরারের ওপর নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এর মধ্যে এজাহারনামীয় ১৬ জন এবং এজাহারের বাইরে পাঁচজন। বাকি চারজন পলাতক।

বুধবার আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এদিন দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘একক কোনো কারণে আবরার হত্যাকাণ্ডটি হয়নি। সে শিবির করে কি-না, হত্যার পেছনে এটি একটি মাত্র কারণ। কিন্তু যারা তাকে হত্যা করেছে তারা এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘কেউ তাদের সাথে দ্বিমত করলে, সালাম না দিলে, তাদের সামনে হেঁসে দিলে ইত্যাদি কারণে তারা নির্যাতন করত। অভিযুক্তরা র‌্যাগিংয়ের নামে নতুনদের আতঙ্কিত রাখতে এসব কাজ করত। এসব বিষয়ে আমরা আগে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে তদন্তে একজন সাক্ষী বলেছে যে, একজনকে সালাম দেয়নি বলে তাকে পেটানো হয়েছে।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘র‌্যাগিংয়ের নামে উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের অভ্যস্ততার অংশ হিসেবেই আবরার হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগে থেকে মনিটরিং করলে এমন ঘটনা নাও ঘটতে পারত। এটা তাদেরই মনিটর করার কথা।’

দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান এখন দৃশ্যমান নয়- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, কোনো অভিযানই থেমে নেই। অভিযান চলছে, তথ্যভিত্তিক অভিযান চালানোর জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা যেখানে তথ্য পাচ্ছি সেখানেই ধরা হচ্ছে। অভিযান চলবে।’