জামালপুরে প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশিত: ১০:৩১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০১৯

জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় প্রতিবন্ধী স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ১৮ নভেম্বর রাতে উপজেলার নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নে ধর্মসভা শুনতে গিয়ে এই পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় সে। তাকে ১৯ নভেম্বর রাতে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বকশীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের পর শিশুটিকে ধর্ষণকারীদের মধ্যে ইব্রাহিম মিয়া নামের এক যুবককে ২০ নভেম্বর বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অভিযোগে জানা গেছে, পাশবিকভাবে ধর্ষণের শিকার শিশুটি নিলাক্ষিয়া পশ্চিমপাড়ায় নিলাক্ষিয়া সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। তার দরিদ্র বাবা রিকশাভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। শিশুটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ছাত্রী হলেও সে শারীরিকভাবে সক্ষম। তবে তার হৃদপিন্ডের অসুখ রয়েছে। ১৮ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে তার এক বান্ধবীকে সাথে নিয়ে একই ইউনিয়নের আদুলিভিটা গ্রামে ধর্মসভা শুনতে যায়।
ধর্মসভা চলাকালে রাত ৯টার দিকে তার বান্ধবী তাকে সাথে করে কাছেই তার দাদাবাড়ি যাওয়ার কথা বলে ধর্মসভা থেকে বেরিয়ে যায়। দাদাবাড়ির কাছাকাছি কয়েকজন যুবক তাদেরকে পথরোধ করে দাঁড়ায়। এ সময় শিশুটির বান্ধবী ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে সেখান থেকে রক্ষা পেলেও ওই যুবকরা শিশুটিকে আটক করে পাশের ধান ক্ষেতে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে সেখানেই ফেলে রেখে যায়। এ সময় শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে সে একাই বাড়িতে গিয়ে ঘটনা খুলে বলে।
পরের দিন ১৯ নভেম্বর সকালে তাকে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হলে ১৯ নভেম্বর রাতেই তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২০ নভেম্বর দুপুরে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আরএমও চিকিৎসক কে এম শফিকুজ্জামান।
জামালপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটিকে দেখতে গিয়ে তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। শিশুটি তাকে ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, ‘আমি ধর্মসভা থেইকা বাইরে যাবার চাই নাই। আমার বান্ধবীই আমাকে জোর করে ডেকে নিয়ে যায়। ছেলেগুলা আমারে ধরামাত্রই আমার বান্ধবী দৌড় মারে। তারপর ছেলেগুলা আমার সাথে খারাপ কাজ করে ক্ষেতের মধ্যে রাইখা পালাইয়া যায়। আমি জ্ঞান হারাইছিলাম। পরে জ্ঞান ফিরলে আমি একাই বাড়িতে গিয়ে ঘটনা খুলে বলি।’

এদিকে এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে তার মেয়েকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে ১৯ নভেম্বর রাতে বকশীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় নিলাক্ষিয়া গ্রামের রিপন মিয়ার ছেলে মো. কালাম মিয়া (২৫), মৃত মজর উদ্দিনের ছেলে ইব্রাহিম মিয়া (৩০) ও মৃত বিক্রম চৌকিদারের ছেলে রনি মিয়াসহ (২০) অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। ২০ নভেম্বর বিকেলে আসামি ইব্রাহিম মিয়াকে নিলাক্ষিয়া গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে গ্রেপ্তার করেছে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হজরত আলী জানান, ‘শিশুটিকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। মামলাটির একজন আসামি ইব্রাহিম মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’