রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া মিয়ানমারের এক ধরনের প্রতারণা : গাম্বিয়া

প্রকাশিত: ৫:৫১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক : নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) শুরু হয়েছে তৃতীয় দিনের শুনানি। বৃহস্পতিবার বিকালে প্রথমে গাম্বিয়া যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছে এবং পরে মিয়ানমার করবে। এরপর আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আদালত রায় ঘোষণা করতে পারেন।

বৃহস্পতিবার আদালতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি-পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন। এ সময় গাম্বিয়ার আইনজীবীরা আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর প্রথম যুক্তি উপস্থাপন করেন। এমন সময় দেশটির এজেন্ট আদালতকে বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এক ধরনের প্রতারণা। তিনি বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের জন্য রাখাইনের পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে সক্ষম কিন্তু অনিচ্ছুক। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্রত্যেককেই নির্যাতন করেছে। তাদের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি গর্ভবতী নারী ও ছোট্ট শিশুরাও। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। দেশটিতে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে।

এর আগে গতকালের শুনানিতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বলেন, দুঃখজনকভাবে, গাম্বিয়া রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিমূলক চিত্র তুলে ধরেছে। তিনি তার দেশের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গণহত্যার উদ্দেশে অভিযান পরিচালনার অভিযোগে বিচার শুরু হয়েছে। কিন্তু রাখাইনে ২০১৭ সালের সামরিক অভিযানে রক্তপাত হলেও গণহত্যার মতো কিছু হয়নি। তবে তিনি স্বীকার করেন, মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনী হয়তো মাত্রাতিরিক্ত রকমের শক্তি প্রয়োগ করে থাকতে পারে। সু চি আরও বলেন, যদি মিয়ানমারের সৈন্যরা যুদ্ধাপরাধ করে থাকে তাহলে তাদের বিচার করা হবে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি জটিল এবং রোহিঙ্গারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে স্বীকার করেছেন সু চি। কিন্তু ২০১৭ সালের সেই রক্তাক্ত অভিযানের কথা বলতে গিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ নিয়ে সু চি বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র (এআরএসএ) মতো সশস্ত্র স্থানীয় গোষ্ঠীর আক্রমণের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। কিন্তু তাদের অভিযানে হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের হত্যা করেছিল তা নিয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি।