ঢাকা থেকে পাবলিক বাসে নির্বাচনী এলাকায় যাতায়াত করলেন মতিয়া চৌধুরী

প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার :  শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন চতুর্থ দফার সরকারের মন্ত্রী পরিষদে না থাকায় অন্যদের মতো বিলাসবহুল গাড়িতে না চেপে এবারও রাজধানী ঢাকা থেকে পাবলিক বাসেই নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাতায়াত করলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর অন্যতম সদস্য, কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। ৭ জানুয়ারী মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় তিনি নকলা শহরস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে শেরপুর থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা নামে একটি পাবলিক বাসে উঠেন। এর আগে রবিবার রাতে রাজধানী ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে একটি পাবলিক বাসে চড়ে সাধারণ যাত্রীদের মতো নকলায় পৌঁছান তিনি। এরপর সোমবার নালিতাবাড়ীতে ও মঙ্গলবার নকলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী ও দরিদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।

এদিকে মতিয়া চৌধুরী তার পিএস (উপ-সচিব) মোঃ শাহজালাল ও গানম্যান রেজাউল করিমকে নিয়ে ওই বাসে উঠার সময় তাকে বিদায় জানান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, নকলা পৌরসভার মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু, নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শামছুন্নাহার কামাল, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, জেলা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান হাবিবসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। ওইসময় পথচারীসহ সাধারণ লোকজন অবাক তাকিয়ে রয় মতিয়া চৌধুরীর দিকে।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ৩ দফায় সফল কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ৫ দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মন্ত্রী পরিষদে অর্ন্তভূক্ত না হলেও সংসদ উপনেতা হচ্ছেন- রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন গুঞ্জন চাউর হয়েছিল। কিন্তু রাজনীতির নানা গ্যাড়াকলে তা শেষটায় ফসকে যাওয়ায় দলের সিনিয়র আরও কয়েক নেতার মতো তার ভাগ্যে জুটে কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির পদ। মর্যাদাপূর্ণ এ পদটি মন্ত্রীর পদমর্যাদা দেওয়ার পরিকল্পনা এখনও চূড়ান্ত না হওয়ায় অন্যদের মতো একজন পিএস ও গানম্যানসহ আনুষঙ্গিক সহায়তা নিয়েই স্বভাবসুলভ নীরবতায় স্বাভাবিকভাবেই চলছেন মতিয়া চৌধুরী। সেই থেকে নির্বাচনের প্রায় ৩ মাস পর প্রথমতঃ স্থানীয় একটি হাইস্কুলে শতবর্ষপূর্তি উৎসবে পাবলিক বাসে চেপে এলাকায় ফিরেন। এরপর থেকে প্রায় এক বছর সময়কালে প্রতিবারই এলাকায় পাবলিক বাসেই যাতায়াত করে নিজের স্বাতন্ত্রবোধটাই বজায় রাখছেন।

মন দিয়ে পড়াশোনা করে শিশুদের চাঁদে যাওয়ার উপদেশ দিলেন বেগম মতিয়া চৌধুরী:
এদিকে সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, শেখ হাসিনা আকাশে স্যাটেলাইট উড়িয়েছেন। চাঁদে যাওয়ার জন্য আমরা সøট চেয়েছি, বুকিং দিয়েছি। আমরা হয়ত যাব না, কিন্তু তোমরা যাবে। সেজন্য মন দিয়ে পড়াশোনা কর। ওই চাঁদে তোমরাই যাবে, এ চাঁদমুখের বাচ্চারাই যাবে। সে দিনের আশায় মন দিয়ে পড়শোনা কর, মানুষের মতো মানুষ হও। ভালো কাজ করে তোমরা আশরাফুল মাখলুকাত হবে। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে নকলা উপজেলা পরিষদ অঙ্গনে শিক্ষার্থীদের মাঝে কম্বল ও প্রণোদনার অর্থ বিতরণ এবং গীিবদের মাঝে কম্বল বিতরণকালে ওই কথা বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে বিতরণকালে অন্যান্যের মধ্যে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিন তিনি নকলা উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৬০টি মসজিদে ১০ হাজার করে টাকা, ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মাধ্যমিক ও দাখিলের ‘টপটেন’ ৪৭৬জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৫শ করে প্রণোদনার অর্থ এবং প্রাথমিক ও এবতেদায়ীর ‘টপটেন’ শিক্ষার্থী ও হতদরিদ্রদের মাঝে মোট ২ হাজার ৬শ কম্বল বিতরণ করেন।