সরিষাবাড়ীতে নদীর স্রোতে ব্রিজের সংযোগ সড়ক ধস, অর্ধশত গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৬:৪৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২০ জামালপুর প্রতিনিধি ॥ জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের শিশুয়া-বাঘমারা ব্রিজের সংযোগ সড়কের প্রায় ৩০ মিটার ঝিনাই নদীর স্রোতে ধসে গেছে। এতে সরিষাবাড়ী উপজেলার সাথে পার্শ্ববর্তী মাদারগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রোবরাতে এ ঘটনা ঘটে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে অন্ততঃ অর্ধশত গ্রামের মানুষ। সাতপোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের জানান, রবিবার রাত ১১টার দিকে যমুনার শাখা ঝিনাই নদীর ওপর নির্মিত শিশুয়া-বাঘমারা ব্রিজ সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বের সংযোগ সড়কে ভাঙন ধরে। বানের পানির প্রবল স্রোতে মূহুর্তেই সড়কের প্রায় ৩০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়ে ব্রিজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে প্রায় ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রিজটি হুমকির মধ্যে পড়েছে। সরিষাবাড়ী পৌরসভা ও সাতপোয়া ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষের পার্শ্ববর্তী মাদারগঞ্জে যাতায়াতের মাধ্যম এ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় দুই উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়ে গেছেন অন্ততঃ অর্ধশত গ্রামের মানুষ। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২১ জুলাই) মধ্যরাতে সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর শাহ্জাদা হাট সংলগ্ন হদুর মোড় এলাকার ঝিনাই নদীর ওপর ২০০ মিটার লম্বা ব্রিজের মাঝামাঝি প্রায় ২০ মিটার বন্যার পানির তীব্র স্রোতে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এতে সরিষাবাড়ী উপজেলা সদরের সাথে ওই এলাকা ও মাদারগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামসহ অন্ততঃ ২০টি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ঘটনার মাত্র পাঁচদিনের মাথায় ওই ব্রিজেরই দেড় কি.মি. দক্ষিণে শিশুয়া-বাঘমারা ব্রিজের সংযোগ সড়ক ভেঙে গেলো। এদিকে সোমবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব উদ্দিন আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি জানান, নদীর তীব্র স্রোতে সড়কটির প্রায় ৩০ মিটার অংশ ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে কথা বলে শীঘ্রই বালুর বস্তা ফেলে বা বাঁশের সাঁকো বানিয়ে আপাততঃ জনসাধারণের চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া ২৫ জুলাই দুপুরে বন্যায় পানির তোড়ে ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালের চর ইউনিয়নের সভারচর এলাকায় একটি সেতু ভেঙে গোয়ালের চর ইউনিয়নের সাথে ইসলামপুর শহরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। উপজেলা প্রকৌশলী সুত্রে জানা গেছে-২০১৫ সালে ব্রীজটি প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত হয়েছে। সেতু ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। কর্তৃপক্ষের সাথে ব্রিজটি দ্রুত সচল করার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেয়া হয়। মাদারগঞ্জে বাঁধ ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত হবার ঘটনা ২৫ জুলাই সকালে তিনি পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, দুর্যোগকালীন এ সময়য়ে সকল বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে। যাতে একটি লোকেও না খেয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। বকশীগঞ্জ উপজেলায় নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নে বন্যাকবলীত স্রোতের কারনে সাজিমারা থেকে নয়াপাড়া যাওয়ার রাস্তা ভেঙে যায় এতে নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের পাশ্ববর্তী ইসলামপুর থানার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ নেমে আসে । গ্রামবাসি মেম্বার চেয়ারম্যানের কাছে বার বার বলার পরেও কোন ব্যবস্থা না করাই মাঠে নেমে পড়ে গ্রামবাসি সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বেচ্ছাসেবী এবং ছাত্রলীগ সবাই মিলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাশঁ-কাঠের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাই মিলে মিশে করে ফেলে বাশঁ কাঠের সাকো। উল্লেখ্য এই রাস্তা ভাঙ্গার ফলে অফিল মিয়া নামে এক ব্যক্তির ভিটা-ভাটি বন্যা পানিতে বিলীন সে এখন পথের মানুষ! গ্রামবাসির দাবি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব রাস্তা ঠিক করতে হবে তানা হলে ভবিষ্যতে সব বাড়িঘর বন্যার কারনে ধ্বংস হয়ে যাবে। এই বিষয়ে ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু মাহমেদ বলেন আমি কিছুদিন থেকে অসুস্থ যার ফলে কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছিনা তবে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ স ম জামশেদ খোন্দকার স্যারের সাথে এই বিষয়ে কথা বলল। আর যেনো রাস্তা না ভাঙ্গে আর যে কারো ঘরবাড়ি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার একটা ব্যবস্থা করবে। জানা যায়, সাজিমারা – নয়াপড়া কাঁচা রাস্তা যার ফলে অতি বিষ্টি ও বন্যার স্রোতে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত ও ভাঙনের সৃষ্টি হয়।এতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয় এলাকাবাসী ও পথচারীদের। জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, বন্যায় জেলার ২ লাখ ৪৮ হাজার ৬৩৪টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও বন্যায় জেলায় এ পর্যন্ত ৩৮৬টি বাড়ি সম্পূর্ণ ও ১৩ হাজার ৭৩৮টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ৫ হাজার ৯৭টি নলকূপ ডুবে গেছে। আর ১১ হাজার ৫৩০ হেক্টর ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, বন্যার কারণে ৬৬ কিলোমিটার পাকা সড়ক ও ১৯৪ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ৫টি ব্রিজ ও কালভার্ট, ২৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৬৫৮টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় জেলার ৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮৩৩টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চার হাজার ৪০২টি নলকূপ ও চার হাজার ৮৬৮টি ল্যাট্টিন। Related posts:৯ শতাধিক মামলা নিষ্পত্তি করে সাড়া ফেললেন বিচারক তাজুল ইসলামসুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কাউকে ছাড় দেব না : দিনাজপুরে ইসি রাশেদাশেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে নিরাপত্তায় থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৩ হাজার সদস্য Post Views: ৫৩১ SHARES সারা বাংলা বিষয়: