জামালপুরে দুর্বৃত্তের ছোড়া এসিডে মারাত্মকভাবে ঝলসে গেছে স্বামী-স্ত্রীর শরীর

প্রকাশিত: ১০:২১ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২০

জামালপুর প্রতিনিধি ॥ জামালপুর সদর উপজেলায় দুর্বৃত্তের ছোড়া এসিডে মারাত্মকভাবে ঝলসে গেছে কৃষক মামুনুর রশীদ বাবলু ও তার স্ত্রী আমেনা বেগমের শরীর। শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের গোপীনাথপুর হাটুভাঙ্গা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। উন্নত ও জরুরি চিকিৎসার জন্য আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই দম্পতিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হযেছে।
ওই দম্পতির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের গোপীনাথপুর হাটুভাঙ্গা গ্রামের কৃষক মামুনুর রশীদ বাবলুর (৫৫) বাড়ির সামনে একটি গরুর খামার রয়েছে। সেই খামারের নির্মাণাধীন গোয়াল ঘরের এক কোনায় একটি চৌকিতে বিছানা পেতেছেন তিনি। প্রতি রাতেই তিনি এবং তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৪৫) সেখানে মশারি খাটিয়ে রাত্রিযাপন করে গরু পাহারা দিতেন। শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা বাবলুর বিছানার মশারির ওপর এসিড ছুড়ে মারেন। তখন তিনি আর তার স্ত্রী ঘুমিয়েছিলেন। এসিডের তীব্রতায় বাবলুর ডান চোখসহ মুখমন্ড ও শরীরের বিভিন্ন স্থান এবং তার পাশে ঘুমিয়ে থাকা তার স্ত্রী আমেনা বেগমের শাড়িকাপড় পুড়ে শরীরের ডান পাশের হাত থেকে পা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান মারাত্মকভাবে ঝলসে গেছে।
এ সময় বাবলু ও তার স্ত্রীর চিকিৎকারে তাদের স্বজন ও প্রতিবেশীরা সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে রাতেই তাদেরকে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের দু’জনকে রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ওই অ্যাম্বুলেন্সে রয়েছেন এসিডদগ্ধ বাবলুর ভাতিজা মো. মেরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার চাচা বাবলুর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মীমের স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বিপুলের সৎভাইদের সাথে জমিজমা নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এই এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। এসিডে আমার চাচা-চাচীর শরীর মারাত্মকভাবে ঝলসে গেছে। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছি।
স্থানীয় নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল লতিফ মিয়া এ ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখান থেকে এসিডে পোড়া মশারি, বিছানার চাদর, কিছু কাপড়চোপড় ও অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করেছি। এসিডদগ্ধ দম্পতির চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন তার স্বজনরা। তারা অভিযোগ দিতে চেয়েছেন। অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করে দ্রুত পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।