স্বামীর নির্যাতনের হাসপাতালের বেডে ছটফট করছে গৃহবধু আনজুআরা

প্রকাশিত: ৬:২৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২০

জামালপুর প্রতিনিধি ॥ পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করে গৃহবধু আনজুআরা। যৌতুকের দাবিতে মাদ্রাসা শিক্ষক স্বামীর পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দুইদিন ধরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের বেডে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। শুক্রবার দুপুরে মুমূর্ষু অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধুর ভাই বাদশা মিয়া বাদী হয়ে মাদারগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের জন্য অভিযোগ দাখিল করেছেন।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর ভাই বাদশা মিয়া জানান, ১৬ বছর আগে মাদারগঞ্জ উপজেলার চর মদন গোপাল গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আব্দুল হালিমের সঙ্গে তার বোন আনজু আরার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্বামী তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করতেন। দরিদ্র বাবার পক্ষে যৌতুক দেয়া সম্ভব হবে না ভেবে তার বোন সব নির্যাতন সহ্য করতেন। বিভিন্ন সময় কথাই-কথাই মারধর করা হতো।
আজ দুপুরে গৃহবধু আনজুআরা জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে ফ্রিজ থেকে মাংস বের করতে একটু দেরি হলে ব্যাপকভাবে মারধর শুরু করেন। একটি রুমের মধ্যে আটকে তাকে টানা কয়েক ঘন্টা মারধর করেন। কিল-ঘুষি এবং লাঠি দিয়ে পৈশাচিক কায়দায় গোপনাঙ্গেও নির্যাতন করেন। কোন রকম চিকিৎসা না দিয়েই ঘরের মধ্যে রেখে দেন। পরে বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পালিয়ে বাড়ি যাই। এ অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার দুপুরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আজ দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলা-জখমে যন্ত্রণায় ছটফট করছে। পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ হাসপাতালের বিছানায় ছটফটের খবর পেয়ে জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রানী সরকার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ওই গৃহবধূকে দেখতে যান। তিনি আনজু আরাকে সব ধরণের আইনি সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন।
আনজুআরার ভাই বাদশা মিয়া, বিকাল তিনটার দিকে বলেন, বোনের নির্যাতনের অবস্থা দেখে আমরা হতভম্ব। পরিবারের কারো মাথা ঠিক নেই। নির্যাতনের ঘটনায় মাদারগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে। নির্যাতিতা আনজু আরার ৮ বছরের একটি ছেলে ও ৬ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার হাসানুল বারী বলেন, শুক্রবার স্বামীর নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ আনজু আরাকে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরের বোতা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তার পিঠে এবং দুই হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জামালপুরের অতিরিক্তি সুপার সুপার সীমা রাণী সরকার জানিয়েছেন, ঘটনার খবর পেয়ে নির্যাতিত গৃহবধূকে দেখতে যাই। তার স্বামী মাদ্রাসা শিক্ষক যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করেছে। তাকে সব ধরণের আইনি সহায়তা দেয়া হবে।