শেরপুরে ৯ বছর পর হারানো সন্তানকে ফিরে পেয়েছে বাবা-মা অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:০৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২১ বিশেষ প্রতিনিধি : ২০১১ সালে মানসিক ভারসাম্যহীন জব্বার আলী শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নের উল্লারপাড় গ্রামের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। হারিয়ে যাওয়ার পর বহুদিন সন্তানের খোঁজ-খবর করেছেন বাবা সেকান্দার আলী ও মা সবুরী খাতুন দম্পতি। এক পর্যায়ে সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়ে ছিলেন তাঁরা। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন ও বাড়ির পাশের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ানের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ৯ বছর পর বাবা-মা ফিরে পেয়েছেন তাঁদের হারিয়ে যাওয়া সন্তান জব্বার আলীকে। এত বছর পর সন্তানকে ফিরে পাওয়ার অনুভূতি ছুঁয়ে গেছে প্রশাসনের কর্মকর্তা থেকে এলাকাবাসী সবাইকে। জব্বার এত দিন ভারতের কারাগারে বন্দী ছিলেন। গত ২৮ জানুয়ারি সিলেটের নয়ানিবাজার শুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরত আনা জব্বারকে তাঁর বাবা সেকান্দার আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এসময় কলেজশিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। জব্বারের বয়স এখন ৩৫ বছর। তিনি যখন নিখোঁজ হন, তাঁর বয়স ছিল ২৬ বছর। পরিবারের ধারণা, ২০১১ সালে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় জব্বার একা একাই বা কারও সাহায্যে নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। সেখানে ভারতীয় পুলিশ তাঁকে আটক করে সেখানকার কারাগারে পাঠায়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সেকান্দার আলী ও সবুরী খাতুন দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলে জব্বার আগে ভালো ছিলেন। ২৩ বছর বয়সে হঠাৎ তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। এর তিন বছর পর মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় বাড়ি থেকে একদিন জব্বার নিখোঁজ হন। বাবা-মা সহ পরিবারের লোকজন তাঁদের সব আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীর বাড়িতে খোঁজ করেন। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় তিন-চার বছর খোঁজার পর বাবা-মা তাদের ছেলের আশা ছেড়ে দেন। পরে জব্বারের বাবা-মা কাজের সন্ধানে রাজধানী ঢাকায় চলে যান। এখন তাঁরা রাজধানীতেই বসবাস করেন। বাবা সেকান্দার আলী ভাঙারির ব্যবসা করেন আর মা সবুরী খাতুন মানুষের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। গত বছরের ৭ অক্টোবর নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহফুজুল আলম উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে ভারতের কারাগারে আটক জব্বারের ছবি, নাম, ঠিকানা দিয়ে সহযোগিতা চেয়ে পোস্ট করেন। ফেসবুকে জব্বারের ছবি ও নাম ঠিকানা দেখে উল্লারপাড় গ্রামের কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান চিনতে পারেন। পরে সুফিয়ান ইউএনওর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন জানতে পারেন, জব্বার ভারতের কারাগারে রয়েছেন। সুফিয়ানকে ইউএনও মাহফুজুল মৌলভীবাজার সদরের ইউএনও শরিফুল ইসলাম সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে জব্বারের পরিচয়পত্র, নাগরিক সনদ মৌলভীবাজারের সদরের ইউএনও শরিফুল ইসলামের ই-মেইলে পাঠানো হয়। পরে শরিফুল ইসলাম সুফিয়ানকে দুই মাস অপেক্ষা করতে বলেন। ইতিমধ্যে সুফিয়ান জব্বারের বাবা-মাকে তাঁদের হারানো ছেলে ভারতের কারাগারে রয়েছেন বলে মুঠোফোনে জানান। পরে ভারতীয় পুলিশ সীমান্ত দিয়ে তাকে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। Related posts:নকলায় ঈদ-উল-আযহা উদযাপনে প্রস্তুতি সভাশ্রীবরদীতে ইউপি নির্বাচনের দুই দিন পর বস্তাভর্তি ব্যালট উদ্ধারশেরপুরে এনসিপি’র গণসংযোগ কর্মসূচি Post Views: ২৪৮ SHARES শেরপুর বিষয়: