আমাদের দেশের পরিচালক ও শিল্পীরা অনেক মেধাবী: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৪:৩৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২১

বিনোদন প্রতিবেদক : ‘আমি মনে করি, আমাদের দেশের পরিচালক ও শিল্পীরা অনেক মেধাবী। যদি মেধাবী না হতো তাহলে এই সংকটময় পরিস্থিতিতে এতো সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ভালো কন্টেন্ট নির্মাণ করে আন্তর্জাতিক পুরস্কার নিয়ে আসতে পারত না। আমাদের দেশের পরিচালক ও শিল্পীরা মেধাবী বলেই অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার নিয়ে আসা সম্ভব হতো না।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত শিল্পী ও কলাকুশলীদের বিশেষ সংবর্ধনা দিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। সেখানেই সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ভালো সিনেমা নির্মিত হচ্ছে বলে প্রশংসা করে কথাগুলো বলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে সংবর্ধনার এ আয়োজনে ১৯৭৫ সাল থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক সমিতির সদস্য এমন পরিচালকদের সম্মাননা জানানো হয়। এছাড়াও গত ২০১৪-১৯ বছরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদের কলাকুশলী ও শিল্পীদেরও সংবর্ধনা জানানো হয়। আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী। আরও উপস্থিত ছিলেন নায়ক সোহেল রানা, আলমগীর, সূচন্দাসহ পরিচালক সমিতির নেতাসহ সদস্যরা।
এ সময় বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, বিগত বছরগুলোতে যারা রাষ্ট্রিয়ভাবে সেরার পুরস্কার পেয়েছেন তাদের নিয়ে এ আয়োজন। এমন একটি চমৎকার আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ পরিচালক সমিতিকে। আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয়েছে। ১৯৫৭ সালে এফডিসি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতির পিতার হাত ধরে এই শিল্পের সূচনা।
আমাদের এই চলচ্চিত্র শিল্প আমাদের দেশ গঠনে, স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলনে, স্বাধীনতা সংগ্রামে, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে অনেক অবদান রেখেছে। অনেক কালজয়ী শিল্পী ও চলচ্চিত্রের জন্ম দিয়েছে। চলচ্চিত্র এমন একটি শিল্প যা মানুষকে এমনভাবে আলোড়িত করতে পারে যেটি সমাজকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করতে সহায়তা করে, সমাজের তৃতীয় নয়ণ হচ্ছে এই চলচ্চিত্র। একই সঙ্গে মানুষকে বিনোদন দিতে পারে। চলচ্চিত্র সমসাময়িক কালকেও ধারণ করে। আমরা যে সময়ের চলচ্চিত্র দেখি সে সময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপটও আমরা দেখতে পাই। আমরা যদি ৫০ বা ১০০ বছর আগের চলচ্চিত্র দেখি তাহলে সে সময়ের সামাজিক চিত্রগুলোও দেখা হয় আমাদের।
সিনেমার উন্নয়ন হবে এমন আশ্বাস দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পী অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়েছে। আপনাদের সঙ্গে আমি একমত আমাদের চলচ্চিত্র আর স্বর্ণালী পর্যায়ে নেই। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শুধু স্বর্ণালী দিনগুলো ফিরিয়ে আনা নয়, বিশ্ব অঙ্গনে যেনো একটি জায়গা দখল করতে পারে সে লক্ষ নিয়ে কাজ করছেন। তারই প্রেক্ষিতে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমরা সবাই জানি, চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রধান অঙ্গ হচ্ছে সিনেমা হল। সিনেমা হল যদি কমে যায় তাহল চলচ্চিত্র শিল্প রুগ্ন হয়ে যায়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অকুণ্ঠ সমর্থনের কারণে ইতোমধ্যে ১ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করে সহজ শর্তে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করেছি। আশা করি এর প্রেক্ষিতে বন নতুন সিনেমা নির্মাণ, পুরোনো হল আধুনিকায়ন, ও নতুন সিনেপ্লেক্স নির্মাণ হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশে অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়েছে। অনেক বছরের দাবি ছিলো প্রচেষ্টা ছিলো সেটি করা সম্ভব হয়নি। এক হাজার কোটি টাকা তহবিলের কারনে যে হল বন্ধ হয়েছে তা চালু করা হবে, যে হল চালু আছে তার আধুনিকায়ন হবে, একই সঙ্গে নতুন হল ও সিনেপ্লেক্স চালুর জন্য সহজ শর্তে লোন পাবে। দেশ তো বদলে গেছে। আমাদের দেশের মানুষের রুচিরও পরিবর্তন হয়েছে। এখন যে কোনো জায়গায় বসে মানুষ সিনেমা দেখতে চায় না। যে কোনো জায়গা বসে যেমন মানুষ খেতেও চায়না তেমনি সিনেমা দেখতও চান না। সিনেমা হলের সুযোগ সুবিধিা যদি ৫০ বছর আগের থাকে তাহলে সিনেমা হলে দর্শক সিনেমা দেখতে যাবে না। পাশাপাশি সিনেমা হলে যদি আরও কিছু বিষয সংযোজন করা যায় সেগুলো যদি করা হয় তাহলে দর্শক সিনেমা হলে ফিরবে। আমি আশা করি, আগামী এক বছরের মধ্যে অনেকগুলো বন্ধ হয়ে সিনেমা হল চালু হবে, নতুন সিনেমা হল উপজেলা পর্যায়ে নির্মিত হবে। এতেকরে বড় বাজেটের সিনেমা নির্মিত হবে। নতুন প্রযোজকরা আসবে। তাদের আর লোকসান গুণতে হবে না।