শেরপুরে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিবাদ সভা

প্রকাশিত: ৪:৩০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০২১

আসাদুজ্জামান মোরাদ ॥ শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য মো. খোরশেদুজ্জামানের বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫ এপ্রিল রবিবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে ওই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় ইউপি চেয়ারম্যান মো. খোরশেদুজ্জামান তাকে জড়িয়ে প্রকাশিত খবরে পরিবেশিত তথ্যকে সম্পূর্ণ তথাকথিত, মিথ্যা, মানহানিকর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তার রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্যে স্থানীয় বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন। সেইসাথে তিনি আনীত অভিযোগ খণ্ডনে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে বলেন, নিজ ইউনিয়নের মুকসুদপুর এলাকার যে মেয়েকে নাবালিকা দাবি করা হয়েছে, সে মূলতঃ সাবালিকা এবং প্রতিবেশী এক যুবকের সাথে প্রেমঘটিত বিষয়ে সে চলে গিয়ে বিয়ে করে। ওই বিয়ের আগেই মেয়েটির পিতা স্বয়ং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তার জন্মনিবন্ধন সংগ্রহ করেছেন। আর ওই ঘটনায় মেয়ের অভিভাবকের দায়ের করা মামলায় আপোসের শর্তে তার কাছে নয়, স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির কাছে ৩০ হাজার টাকা ছেলেপক্ষ জমা রাখলেও পরবর্তীতে আপোসরফা ভেঙে যাওয়ায় মেয়েপক্ষ সে টাকা পায়নি। পরবর্তীতে ওই ছেলে-মেয়ের মধ্যে তালাক হয়ে যায় এবং মেয়েটি সাবালিকা হওয়ায় বর্তমানে শ্রীবরদী এলাকায় নতুন করে বিয়ে করে সংসার করছে। আর মুন্সীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মুন্সীরচর মতিজান উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূমিতে মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ওই প্রতিষ্ঠান দু’টির জমিদাতা তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরাই। এর আগে প্রায় ৮ মাস পূর্বে ওই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করা হলেও উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সরেজমিন তদন্তে তার সত্যতা মেলেনি। অর্থাৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জায়গায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জায়গায় তিনিসহ ৬ ভাইয়ের মার্কেটের অবস্থান রয়েছে। এছাড়া তিনি শহরের চকপাঠক মহল্লায় মাত্র ৫ শতক জায়গায় অবৈধ টাকায় ভবন নির্মাণের অভিযোগটিও সাজানো ও তথাকথিত দাবি করে বলেন, ওই এলাকায় মোট ৯ শতক ভূমির মধ্যে সাড়ে ৭ শতক ভূমি প্রায় ৩৫ বছর আগে তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এবং অবশিষ্ট দেড় শতক ভূমি ২০০৭ সালে নিজের ক্রয় করা। এছাড়া তার স্ত্রী সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করায় তার পেনশন ও জিপি ফান্ডসহ অন্যান্য তহবিলের টাকায়, অপর এক সহোদর ছোটভাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করায় তার কাছে নেওয়া হাওলাদি টাকাসহ নিজের মালিকানাধীন জায়গা-জমি বন্ধক রেখে ওই ভবনটি নির্মাণ করছেন। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, তার বক্তব্য না নেওয়া হলেও প্রকাশিত একতরফা খবরে অভিযোগকারীদের সাথে তার নিজের ছবিও প্রকাশ ও প্রচার করা হয়েছে, যা রীতিমতো মানহানিকর। প্রতিবাদ সভায় স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বাবুল তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান আলী ও ইউপি সদস্যগণসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ইউপি চেয়ারম্যান মো. খোরশেদুজ্জামান দীর্ঘ প্রায় ৫৫ বছর যাবত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি দীর্ঘসময় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন। এছাড়া তিনি ৩ দফায় নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান। গত ২২ এপ্রিল একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে স্থানীয় এক নাবালিকার সাবালিকা জন্মসনদ সরবরাহ করে বিয়ের ব্যবস্থা ও ওই বিষয়ে আপোস-মিমাংসার নামে অর্থ আত্মসাৎ, মুন্সীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মতিজান উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূমিতে মার্কেট নির্মাণসহ শহরে অবৈধ টাকায় ভবন নির্মাণের একতরফা অভিযোগ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এর প্রতিবাদে এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র অসন্তোষ।