সুস্থ জাতি গঠনে মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৬, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শুধু বস্তুগত পরিবর্তন নয়, নৈতিকতা দিয়ে রাষ্ট্রকে আরও উন্নত করতে হবে। এ জন্য সাংবাদিকদের রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরতে হবে। তিনি বলেন, দেশে মাদকাসক্ত উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গেছে। এটা নিয়ে সামাজিকভাবে ক্যাম্পেইন হওয়া উচিত।
বুধবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা ও করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) এবং গবেষণাধর্মী সংগঠন ভয়েস যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
এলআরএফের সভাপতি মাসহুদুল হকের সভাপতিত্বে এবং ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদের পরিচালনায় কর্মশালায় বক্তব্য দেন টিভি টুডে’র প্রধান সম্পাদক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালীন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান, এলআরএফের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সোহেল রেজা চৌধুরী, প্রজ্ঞার হেড অব টোবাকো কন্ট্রোল হাসান শাহরিয়ার, সাদিয়া রহমান প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সুস্থ জাতি গঠনে তামাক ও মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ একান্ত প্রয়োজন। কারণ একজন ধূমপায়ী যেমন তিলে তিলে নিজেকে ধ্বংস করে, একজন মাদকাসক্ত পুরো পরিবারকে ধ্বংস করে। সুতরাং এই ক্যাম্পেইনকে আরো জোরদার করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধূমপানের বিরুদ্ধে সামাজিক ক্যাম্পেইন ও সরকারের আইন প্রণয়নের কারণে ধূমপায়ীর সংখ্যা আনুপাতিক হারে অনেক কমেছে। জনসংখ্যার মাত্র ৩৫ শতাংশ ধূমপানের সাথে যুক্ত, এটি একসময় ৭০ শতাংশের ওপরে ছিল। এটি খুব ভালো দিক।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০৪০ সাল নাগাদ দেশকে ধূমপানমুক্ত করার জন্য তামাকবিরোধী আন্দোলনকে আরো বেগবান করা প্রয়োজন। একইসাথে যদি আইনের সংস্কার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রেও আমাদেরকে চিন্তাভাবনা করতে হবে।
তিনি বলেন, বিত্ত যখন রাষ্ট্রকে চোখ রাঙ্গায় বা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়, সেই বিত্ত তখন দুবৃত্ত হয়ে যায়। সেটির বিরুদ্ধেও লিখতে হবে।
কর্মশালায় তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি জানিয়ে বলা হয়, গত একদশকে দেশের মানুষের মাথাপিছু জাতীয় আয় বৃদ্ধি পেলেও সিগারেট, বিড়ি বা অন্যান্য তামাক পণ্যের দাম খুব পরিমাণে বেড়েছে। একারণে তামাক পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে দাঁড়িয়েছে কঠিন। এই প্রেক্ষাপটে আইন সংশোধন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন আলোচকরা।
কর্মশালায় ভয়েসের প্রকল্প সমন্বয়কারী জায়েদ সিদ্দিকী জানান, বিশ্বে সর্বোচ্চ তামাক ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম প্রথম দিকে এবং ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাকে আসক্ত।
সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, তামাকের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে আয়োজিত দক্ষিণ এশীয় স্পিকার্স সম্মেলনে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাক মুক্ত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ঘোষনা দেন। পাশাপাশি দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ফ্রেম ওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার আশ্বাস দেন তিনি।
অধ্যাপক সোহেল রেজা বলেন, গ্লোবাল টোব্যাকো এটলাসের হিসাব অনুযায়ী গত বছর তামাকের করাল গ্রাসে প্রাণ হারিয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ। তামাকের কারণে অকালে পঙ্গুত্ব বরণ করে আরো অগণিত মানুষ।