নকলায় ইউপি নির্বাচনে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ

প্রকাশিত: ৩:০৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২১

শেরপুরের নকলা উপজেলার গণপদ্দী ডিজিটাল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান শামছুর রহমান আবুলকে পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও অন্য চেয়ারম্যান মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।
২৭ অক্টোবর বুধবার বিকেলে নকলা উপজেলার গণপদ্দী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ওই সমাবেশে চেয়ারম্যান থাকাকালে শামছুর রহমান আবুলের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তার মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানানো হয়। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শামছুর রহমান আবুল বলেছেন, একটি মহল নৌকার মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গনপদ্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহজাহান আহাম্মেদ, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাশেদ, ইউনিয়ন আওয়ামী যুব লীগের সভাপতি আশরাফুজ্জামান রাসেল, গনপদ্দী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আমীর হামজা ও যুব নেতা সাইফুল ইসলাম সরকার লিটন প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান শামছুর রহমান আবুল জনবিচ্ছিন্ন। তিনি পরিষদে না গিয়ে বাড়ির সামনে ভ্রাম্যমাণ পরিষদ বানিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া এ ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগের সমর্থিত ছয়জন ইউপি সদস্যকে সরকারি বরাদ্দ সমভাবে বণ্টন না করে অন্য ইউপি সদস্যদের বণ্টন করে দেন। এতে এ ইউনিয়নের ইউপি সদস্যরা বিপাকে রয়েছেন। এছাড়া তিনি প্রাথমিক বিদ্যলয় ও গ্রাম পুলিশের নিয়োগ নিয়েও বাণিজ্য করেছেন। সাধারণ জনগণ পরিষদ থেকে জন্ম নিবন্ধন তুলতে গেলেও পাঁচ-ছয়শত টাকা করে নিয়েছেন। পরিষদের গাছ কাটা, পেকুয়া বিলের টাকা আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তারা আরও বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে আবুল গত পাঁচ বছর কাজ করেছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান জনগণকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন দিনের পর দিন। প্রতিবাদ করতে গেলে নানাভাবে হুমকিও দিয়েছেন। তাই আসন্ন নির্বাচনে শামছুর রহমান আবুলের নৌকার মনোনয়ন বাতিল করে জনগণমুখি ও পরিচ্ছন্ন মনের মানুষ প্রাক্তন চেয়ারম্যান আমির হামজাকে নৌকা প্রতিক দেওয়ার জোর দাবি জানান।
মনোনয়নপ্রত্যাশী পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতা আরও জানান, যদি নৌকা প্রতিকের প্রার্থী পরিবর্তন না করা হয়, তাহলে বিপুল ভোটে নৌকা ভরাডুবি হবে এই ইউনিয়নে। তারা আরও অভিযোগ করেন, শামছুর রহমান আবুল আওয়ামী বিরোধী পরিবারের সদস্য। শুধু তিনি ছাড়া তার বাড়ির আর কেউ আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন না। সমাবেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরাসহ ইউনিয়নের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
তবে সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সভার বক্তব্যকে প্রত্যাখান করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামছুর রহমান আবুল বলেন, আমাকে হেয় করার জন্য একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে। এরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নৌকা প্রতিক নিয়ে এবারও আমি বিপুল ভোটে জয়ী হবো ইনশাআল্লাহ। সেইসাথে আমার ইউনিয়নের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবো।
উল্লেখ্য, আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে নকলা উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ২ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিল, ৪ নভেম্বর বাছাই ও ১১ নভেম্বর প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ।