শেরপুরে বিদেশী সবজী ব্রোকোলি চাষে সফল কলেজ ছাত্র ছোবাহান

প্রকাশিত: ৪:৩৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২

শেরপুর জেলার মাটি সবজীর চাষের জন্য খুবই উপযোগী। নানা ধরনের সবজী চাষ হয়ে থাকে জেলার বিভিন্ন স্থানে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে পাঠানো হয় এখানকার সবজী। এবার বিদেশী শীতকালীন উন্নত সবজী ব্রোকলী চাষ করে আশার আলো দেখিয়েছে জেলার সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী সরকারি কলেজের স্মাতক বিভাগের ছাত্র সোবহান আলী। ব্রোকলী দেখতে অবিকল ফুলকপির মতো। তবে রং গাঢ় সবুজ। দেশে ব্রোকলির চাষ খুব বেশি দিন আগে শুরু হয়নি। সেই হিসেবে সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলায় প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে শীতকালীন সবজি ব্রোকলী। বিদেশি সবজি ব্রোকলী চাষের এ উদ্যোগ হাতে নেন ওই ছাত্র। একই সাথে ক্যাপশিক্যামেরও আবাদ করেছে সে। অন্য ফসলের চেয়ে কম খরচে ফলন ভালো হওয়ায় এ সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় চাষীদের। এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে ভিটামিনে ভরপুর এ সবজি ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর।

ছোবাহান মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, ১৩ শতাংশ জমিতে এ সবজি চাষ করেছেন সে। আর এর জন্য খরচ হয় মাত্র দশ হাজার টাকা। প্রথমবারেই ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। তাই তিনি আশা করছেন ২৫ হাজার টাকার ব্রোকলী বিক্রি করতে পারবেন। ব্রোকলি খুবই পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি। ব্রোকলির শুধু কুঁড়ি অংশটি খেতে পারেন। আবার চাইলে নরম ডাঁটা অংশটুকু রাখতে পারেন। ডাঁটাতেও পুষ্টি আছে। ব্রোকলি রান্নার পাশাপাশি সালাদ ও মাংসের সঙ্গে রোস্ট করে খাওয়া যায়। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি ক্যানসার প্রতিরোধী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, গ্যাসট্রাইটিস প্রতিরোধী, ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, বয়স ঠেকায় ও ত্বক সুন্দর করে। ছোবহানের এ সাফল্যজনক উদ্যোগ দেখে আগ্রহ বেড়েছে অন্য চাষীদেরও। আর এ ব্রোকলির পাশাপাশি একইসাথে ক্যাপসিকাম লাগিয়েছেন। ব্রোকলির সাথে ক্যাপসিকাম লাগিয়ে বাড়তি আয়ের জোগান দিয়েছেন।

স্থানীয় চাষী খলিলুর রহমান বলেন, আমগর এলাকায় এই বিদেশী ফসল হবো আমরা আগে চিন্তা করি নাই। কিন্তু সোবাহান লাগাইছে। যদি সোবাহান ভালা লাভ পাই। তাইলে সামনের বার আমিও এর চাষ করমু।
স্থানীয় চাষী আব্দুল মোতালেব বলেন, ফলডা তো দেখতে ভালাই। প্রথমে আমি মনে করছি এইডা মনে হয় ফুলকপি। কিন্তু এহন হুনলাম(শুনলাম) এই ফল বলে মেলা রোগ সারানোর কামও করে। আর অন্য ফসলের চেয়ে লাভও ভালা। যদি কৃষি অফিস আমগরে চারা দেই। তাহলে সামনের বার আমি এল্লা লাগামু।
শ্রীবরদী থেকে ফসল দেখতে আসা রুবেল বলেন, আমগর এলাকায় এই ফসল আগে দেখি নাই। কিন্তু শুনলাম নতুন ফসল চাষ হয়েছে তাই দেখতে আসলাম। এর আগে কখনো ব্রোকলি কিনে খাই নাই। আজ একটা কিনে নিয়ে খেয়ে দেখমু কেমন লাগে।

শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি অফিসার মো: হুমায়ুন দিলদার এ প্রতিবেদককে বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নানাভাবে সহায়তা করা হচ্ছে এ উদ্যোক্তা ছাত্রকে। ব্রোকলী ও ক্যাপসিক্যামের চারা এবং বীজ সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে পরামর্শ প্রদান করে আসছি আমরা। প্রথমবার তরমুজের আবাদ করে লোকসানের মুখে পড়েছিলো ছোবাহান। এবার ব্রোকলী চাষে সাফল্য পেয়েছে এ তরুন সবজী চাষী। তার সাফল্যে অন্যরাও কৃষি কাজে এগিয়ে আসবে এমন প্রত্যাশা আমাদের সকলের।