জামালপুরে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল-ক্লিনিকের রমরমা ব্যবসা অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২৫ জামালপুর থেকে রুহুল আমিন : জামালপুর জেলার সদরসহ সাতটি উপজেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে অর্ধশতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব প্রতিষ্ঠানে নেই সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা, জরুরি বিভাগ, মানসম্মত যন্ত্রপাতি কিংবা দক্ষ টেকনিশিয়ান। এ অবস্থায় চিকিৎসার নামে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণ। সরেজমিন ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহর থেকে শুরু করে উপজেলার অলিতে-গলিতে গজিয়ে উঠেছে চোখ ধাঁধানো ব্যানার ও সাইনবোর্ডসম্বলিত ক্লিনিক ও হাসপাতাল। অনেক প্রতিষ্ঠানেই ডাক্তার নেই, নার্স নেই, জরুরি বিভাগ নেই—তবুও পার্টটাইম ডাক্তার ভাড়া করে জটিল অস্ত্রোপচার চালানো হচ্ছে অনায়াসে। জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর সদরে ৫০ টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে ২৮টি, মেলান্দহে ৫টির মধ্যে ৪ টি, ইসলামপুরে ২টির মধ্যে ২ টি, দেওয়ানগঞ্জে ২টির মধ্যে ২টি, মাদারগঞ্জে ৩টির মধ্যে ২টি, সরিষাবাড়ীতে ৪টির মধ্যে ২টি, বকশীগঞ্জে ২টির মধ্যে ২টি হাসপাতালের লাইলেন্সের মেয়াদ ছিল ২০২১-২০২২ অর্থ বছর পর্যন্ত। এর পর থেকে এসব হাসপাতাল চলছে স্বাস্থ্য বিভাগের লাইন্সেস ছাড়াই অবৈধভাবে। অপরদিকে জামালপুর সদরে ৬৫ টি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি সেন্টারের মধ্যে ৪৩ টি, মেলান্দহে ৯টির মধ্যে ৭ টি, ইসলামপুরে ৮টির মধ্যে ৬ টি, দেওয়ানগঞ্জে ৮টির মধ্যে সবক’টি, মাদারগঞ্জে ৯টির মধ্যে ৬টি, সরিষাবাড়ীতে ২০টির মধ্যে ১৯টি, বকশীগঞ্জে ১৫টির মধ্যে ১৩টি গত ৩ বছর ধরে চলছে স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স ছাড়াই । গত ৫ জুলাই জামালপুর পৌরসভার নগর মাতৃ সদনে অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকের অনুপস্থিতে নবজাতকের মৃত্যু হয় এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে প্রসূতির অবস্থাও আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও মূলহোতারা রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২৬ মে, জামালপুর দিকপাইত এলাকার এক গৃহবধূ রিতু, দুবাই হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে মৃত্যুবরণ করেন। গত বছরের ১ নভেম্বর এম.এ. রশিদ হাসপাতালে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান প্রসূতি হাসি খাতুন। ১৩ নভেম্বর নকীব উদ্দিন হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর ভুলে মারা যায় এক নবজাতক। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, ঘটনাগুলোর পর একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কার্যক্রম। দি রেনেসা জেনারেল হাসপাতাল ও হিউম্যান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ডা. আবুল কালাম আজাদ স্বীকার করেছেন তিন বছর ধরে লাইসেন্স ছাড়াই প্রতিষ্ঠান দুটি পরিচালনা করছেন। লাইসেন্স নবায়নের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি। জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, হাসপাতালের নামে কসাইখানা খুলে বসেছে অনেকেই। এখনই ব্যবস্থা না নিলে অপচিকিৎসার ভয়াবহতা আরও বাড়বে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হক জানান, লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিকের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হবে। Related posts:জামালপুরের ধানুয়া কামালপুর মুক্ত দিবস আজজামালপুরে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করলেন পৌর মেয়র ছানুসরিষাবাড়ীতে গুলি পিস্তল ম্যাগাজিন উদ্ধার Post Views: ৩৬ SHARES জামালপুর বিষয়: