ঢাকার বাইরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ৪:১৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২৫

ঢাকার বাইরের বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে আইনজীবীরা। সোমবার (৭ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাধারণ আইনজীবীদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এদিন দুপুরে বিক্ষোভ মিছিলটি সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন প্রাঙ্গণ ঘুরে আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে এসে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে আইনজীবীরা ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। তারা বলেন, সংবিধান ও আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে অবৈধভাবে ঢাকার বাইরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের পরিবর্তে বরং আরও বাড়বে। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
এ সময় বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মিলন, আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমান, বারের সাবেক সহসম্পাদক মাহবুবুর রহমান খান, আইনজীবী মাকসুদ উল্লাহ, ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম, নাসের খান, আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল কুদ্দুছ বাদল, মো. রেজাউল করিম, মো. আল আমিন, জুয়েল মুন্সি প্রমুখ।
ঢাকার বাইরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন না করতে প্রধান বিচারপতির কাছে এক আইনজীবীর আবেদন :
বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের উদ্যোগ না নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবে
প্রধান বিচারপতির কাছে লেখা আবেদনটি আজ হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের (বিচার) কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী আইনজীবী সাইফুল ইসলাম।
সম্প্রতি হাইকোর্ট ডিভিশনের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থানান্তরের সম্ভাবনার কথা আলোচনায় এসেছে বলে আবেদনে উল্লেখ করেছেন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম।
তিনি আবেদনে লিখেছেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন। তাই তিনি এ বিষয়ে তার মতামত ও আপত্তি সদয় বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করছেন। আবেদনে এই আইনজীবী তার ৫টি যুক্তি উল্লেখ করেছেন।
১. সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মূল আসন রাজধানী ঢাকায় থাকবে। হাইকোর্ট ডিভিশনের সেশন অন্যত্র বসানো গেলেও সেটি অস্থায়ী। এর স্থায়ী স্থানান্তর সাংবিধানিক চেতনার পরিপন্থি।
২. বিভিন্ন বিভাগে আলাদা বেঞ্চ স্থাপন করা হলে একমুখী আইনপ্রয়োগে ভিন্নতা ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। এটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এককতা ও নীতিনির্ধারণের ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
৩. বিভাগীয় শহরে বিচারপতি, স্টাফ, অবকাঠামো ও নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা অত্যন্ত ব্যয়সাধ্য ও জটিল। এতে রাষ্ট্রের অর্থ, সময় ও দক্ষতার অপচয় হবে।
৪. স্থানীয় প্রভাব, সামাজিক চাপ ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বিচারকার্যে প্রভাব ফেলতে পারে। এটি হাইকোর্টের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস করতে পারে।
৫. ঢাকায় হাইকোর্টের মামলার সংখ্যা অনেক বেশি। বিচারপতিদের বিভাগে পাঠানো হলে ঢাকায় বিচারিক জট আরও বেড়ে যাবে।