দিনে কতগুলো ডিম খাওয়া নিরাপদ? কী বলছেন পুষ্টিবিদ অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১২:২২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২৫ ডিম একটি সহজলভ্য ও পুষ্টিকর খাবার; যা অনেকেই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখেন। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি শরীরের জন্যও খুব উপকারী। বিশেষ করে প্রোটিনের ভালো উৎস হিসেবে ডিমের গুরুত্ব অনেক বেশি। প্রোটিনের হিসেবে, একটি মাঝারি আকারের ডিমে সাধারণত প্রায় ৬ থেকে ৭ গ্রাম প্রোটিন এবং ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। এ ছাড়াও এতে ভিটামিন B12, D ও A, পাশাপাশি কোলিন, লুটিন ও জিয়্যাক্সানথিন থাকে, যা চোখের যত্নে সহায়তা করে। এতে থাকা ওমেগা-৩, বিশেষ করে DHA, মস্তিষ্ক ও হৃদয়ের জন্য উপকারী। তবে জনসাধারণের মনে প্রশ্ন ওঠে, প্রোটিনযুক্ত এই খাবার একসঙ্গে বা সারা দিনে কয়টি খাওয়া নিরাপদ। কেউ বলেন দিনে একটি খাওয়া ভালো, আবার কেউ বলেন একের অধিক খেলে সমস্যা নেই। তবে দিনে কয়টি ডিম খাওয়া যাবে এ বিষয়ে ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ প্রকাশ কদম। পুষ্টিবিদ প্রকাশ কদম মতে, প্রতিদিন বা একসঙ্গে ১-৩টি ডিম খাওয়া একদম নিরাপদ। অর্থাৎ দিনে ২-৩টি ডিম খেলে ১৮ থেকে ২১ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন পাওয়া যায়, যা একজন প্রাপ্তবয়স্কের দৈনিক প্রোটিন চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করতে সাহায্য করে। তবে যদি কোলেস্টেরল বা হৃদরোগজনিত সমস্যা থাকে, তাহলে অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। দিনে বেশি ডিম খাওয়া কি ক্ষতিকর : কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়তে পারে : একটি ডিমে প্রায় ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। তাই কেউ যদি দিনে ৩টি ডিম খান, তাহলে হার্ট অ্যাটাক বা ধমনিতে ব্লকেজের ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তাদের জন্য এ ঝুঁকি আরও বেশি হতে পারে। কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ : বেশি প্রোটিন গ্রহণ করলে দীর্ঘমেয়াদে কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা ক্ষতির কারণ হতে পারে। এই ঝুঁকি আরও বাড়ে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা না হয়। বদহজম ও গ্যাসের সমস্যা : অনেকেই ডিম খাওয়ার পর পেট ফাঁপা, ঢেকুর বা গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন। এমন সমস্যা যাদের আছে, তাদের ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলা হয়। ডিম খাওয়ার উপায় : সেদ্ধ ডিম: ডিম খাওয়ার সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর উপায় হলো সেদ্ধ করে খাওয়া। কারণ এতে ক্যালোরি ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম থাকে। অল্প তেলে পোচ বা স্ক্র্যাম্বলড: ভাজা ডিমে ট্রান্সফ্যাট ও কোলেস্টেরল বেশি থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে চাইলে অল্প তেলে হালকা পোচ বা স্ক্র্যাম্বলড করে খেতে পারেন। তবে সবচেয়ে উপকারী হয় যদি সকালে নাশতায় সেদ্ধ ডিম খাওয়া হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ : সাধারণভাবে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দিনে ১-২টি ডিম খেতে পারেন। যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন বা পেশি গঠনে মনোযোগী, তারা দিনে ৩টি ডিম পর্যন্ত খেতে পারেন। তবে যদি ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল বা কিডনি-সম্পর্কিত কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে ডিম খাওয়ার বিষয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। ডিমের বিকল্প : প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ডিম ছাড়াও মুরগির মাংস, টুনা মাছ, ডাল ও ছোলা, দুধ-দই, বাদাম এবং বিভিন্ন ধরনের বীজ খেতে পারেন। সতর্কতা : ডিম একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের উৎস। তবে এটি খাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। একজন সুস্থ মানুষ দিনে ১ থেকে ৩টি ডিম খেতে পারেন, তবে খাদ্যতালিকায় সবসময় ভারসাম্য বজায় রাখা প্রয়োজন। Related posts:ঘরেই তৈরি করুন রসমালাই৫ উপায়ে স্বাস্থ্যকর খাবারআঙুল ফোটালে কী হয়? Post Views: ৫০ SHARES লাইফস্টাইল বিষয়: