লাল না হলুদ, কোন কলা উপকারী, জানালেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা

প্রকাশিত: ১২:২৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২৫

কলা হচ্ছে পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল। এটি শরীরের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর। সুস্বাদু এই ফল বিভিন্ন নামে পরিচিত। কোথাও মুসা আকুমিনাটা, কোথাও কিউবান কলা, কলোরাডো কলা বা লাল কলা নামে পরিচিত। এছাড়াও রয়েছে হলুদ কলা। রকমারি কলার মধ্যে অনেকেরই প্রশ্ন, কোন কলা ভালো বেশি।

লাল কলা জিনগতভাবে পরিবর্তন হয় না এবং এটি চাষ ও জৈবিক বাছাইয়ের মাধ্যমে এর ধরন সৃষ্টি হয়ে থাকে বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন ডেইলি ডায়েটের পুষ্টিবিদ ও সিইও একতা ট্যান্ডন। তিনি বলেন, এসব কলা স্বাদে মিষ্টি। আর লাল কলা রোগ প্রতিরোধী, এর গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং ঘন ঘন ফল উৎপাদন করে।
হায়দারাবাদের এলবি নগরের গ্লেনেগলস আওয়ার হাসপাতালের প্রধান ডায়েটিশিয়ান ডা. বিরালি শ্বেতা কলার পুষ্টিগুণ আলোচনা করেছেন। এবার তাহলে লাল কলা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
শক্তি সরবরাহ: হলুদ কলার মতো লাল কলাও প্রাকৃতিক শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। যা আপনাকে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে থাকে।
হার্ট ভালো রাখে: শরীরের জন্য কিছু্ উপকারিতা ছাড়াও এটি কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে রাখে। যা হৃদরোগের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে। উচ্চ পটাশিয়ামের পরিমাণ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
হজমে সহায়তা: লাল কলায় প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে। যা হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: এসব কলায় ভিটামিন সি, বি৬ থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ত্বক ও চোখের জন্য ভালো: কলায় বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বিটা-ক্যারোটিন উপাদান ত্বক ভালো রাখতে ও দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতে সহায়তা করে।
ওজন কমানো: ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় ও ক্যালোরি কম থাকায় এ কলা আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে। ফলে ক্ষুধা কম পায় এবং খাদ্যতালিকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত এ কলা খেলে পেট ফাঁপা কমা ও উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৈচিত্র বৃদ্ধি পায়।
আপনার যদি অ্যালার্জি না থাকে বা অতিরিক্ত না খান, তাহলে লাল কলা সাধারণত সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এ জন্য পরিমিত পরিমাণে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার অংশ হিসেবে কলা রাখতে পারেন বলে জানিয়েছেন ডা. বিরালি।
লাল ও হলুদ কলার পার্থক্য:
পুষ্টিবিদ ট্যান্ডন বলেন, হলুদ কলার তুলনায় লাল কলা ঘন ও ছোট হয়ে থাকে। এতে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও বেশি থাকে। যা মিষ্টি হলেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, এটি ডায়াবেটিস রোগীদের বা ওজন বজায় রাখতে উপকারী।
লাল কলার পুষ্টিগুণ হলুদ কলার মতো হলেও এতে প্রচুর পরিমাণ বি৬, ম্যাগনেশিয়াম ও বিটা ক্যারোটিনয়েড থাকে, যে কারণে এ কলা সবার পছন্দের। প্রতিদিন ১-২টি লাল কলা খাওয়া স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। তবে তা খাবারের সঙ্গে নয়, বরং খাবারের মাঝে খাওয়া উচিত। এতে এর পুষ্টিগুণ ভালোভাবে শোষণ করে থাকে শরীর।
পুষ্টিবিদ ট্যান্ডনের মতে, প্রতিদিন লাল কলা খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায় ও রক্তে শর্করার মাত্রা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এটি খাওয়া হলে আপনাকে শক্তি ও পূর্ণতার অনুভূতি প্রদান বরে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।