আমাকে আর ছুঁড়ো না—সাংবাদিকতা নয়, জীবন চাই”

প্রকাশিত: ৫:৩৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৯, ২০২৫

ন্যায়-অন্যায় যার- যা ইচ্ছে করুক। চোখ দিয়ে দেখবো আর কান দিয়ে শুনবো। কিন্তু ল্যাপটপের কি-বোর্ডেও হাত চালাবো না, মুখেও উচ্চারণ করবো না, কি দেখেছি বা কি শুনেছি। আমার জীবনটা আমার কাছে এবং আমার পরিবারের কাছে অনেক দামী।

সংবাদিকতা করতে গিয়ে গত ১২ বছরে বহুবার আক্রমণের শিকার হয়েছি। বিচার চেয়েছি রাষ্ট্রের কাছে। বিচার পেয়েছি কি না, সেটা সবাই জানে। কিছুদিন আগেও কয়েক জন্য সাংবাদিক নিউজ কাভার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি। বিচার পেয়েছি?

এনাফ ইজ এনাফ। আর নয়। অন্যের জন্য জীবন বিপন্ন করতে আর প্রস্তুত নই। দশের জন্য সত্য বলতে গিয়ে চাপাতির কোপে জীবন গেলে, মিডিয়ারা বড়জোর একমাস আমাকে নিয়ে লেখালেখি করবে।

এরপর সবাই ভুলে যাবে। আর সবাই ভুলে যাওয়ার আগেই আমার জেলায় নতুন একজন রিপোর্টার নিয়োগ হবে। আমার সহকর্মীদের মধ্যেই অনেকের দৌড়ঝাঁপ শুরু হবে আমার পদটা বাগিয়ে নেয়ার জন্য।

এদিকে আমার পরিবারের সদস্যদের জীবনে নেমে আসবে অন্ধকারের বিভীষিকা। টাকার অভাবে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হবে। ছন্নছাড়া সংসারের হাল ধরতে ছেলে তার লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়ে রোজগারের পথ খুঁজবে।

আর পরের অংশটুকু না বললেও সবাই জানে কি হবে।

জামালপুরের বকশীগঞ্জের নাদিম হত্যার বিচার কি পেয়েছি? রাজধানীতে নিজ শোবার ঘরে সাগর ও রুনির খুন হওয়ার আজ যুগ পেরিয়ে গেছে। ছোট্ট ‘মেঘ’ এখন টগবগে যুবক। সে কি তার বাবা-মা হত্যার বিচার পেয়েছে?

তাই, বাংলা সিনেমার মত নীতিবান পুলিশ অফিসার ‘মান্না’ হওয়ার কোনো ইচ্ছাই আমার নাই। এতে আমার মিডিয়া আমাকে চাকুরীচ্যুত করলেও আপত্তি নেই। কারণ জীবনের জন্য চাকরি বা প্রোফেশন৷ প্রফেশনের জন্য জীবন নয়।

লেখক : শহিদুল ইসলাম হিরা, স্টাফ রিপোর্টার, সময় টেলিভিশন।