১২ দিন পর রোববার খুলছে মাইলস্টোন কলেজ

প্রকাশিত: ৮:৪৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২৫

ভয়াবহ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার ১২ দিন পর অবশেষে রোববার খুলছে রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। গত ২১ জুলাই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর থেকেই বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। গত ২৭ জুলাই খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও শোক ও শিক্ষার্থীদের মানসিক সহায়তার জন্য ছুটি আরও বাড়ানো হয়। তবে, প্রথম দিন কোনো নিয়মিত ক্লাস বা পরীক্ষা হবে না। নিহতদের স্মরণে একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল জানান, রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্মরণসভাটি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করা হবে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক দিক বিবেচনা করে আরও কিছু কর্মসূচি পালিত হবে।
গত ২১ জুলাই একটি যুদ্ধবিমান কলেজের একটি ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হলে বহু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হতাহত হন। এই শোকাবহ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুস্থতার কথা বিবেচনা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মানসিক সহায়তার জন্য বিশেষ কাউন্সেলিং সেশনেরও আয়োজন করা হয়েছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুস্থতার কথা বিবেচনা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মানসিক সহায়তার জন্য বিশেষ কাউন্সেলিং সেশনেরও আয়োজন করা হয়েছে।
উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনা নিয়ে শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানে এক আবেগঘন মুহূর্তে অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর খান জানান, ওইদিন শিক্ষক নিয়োগের একটা সাক্ষাৎকার ছিল। প্রধান শিক্ষকের ডাকে তিনি সেই বোর্ডে যান। দুর্ঘটনার ঠিক ৭-৮ মিনিট আগে আমি দুর্ঘটনার স্থান থেকে গিয়েছিলেন, না হলে তিনিও সেদিন নিহত হতে পারতেন।
শনিবার উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য লাভের কামনায় শোক এবং দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে এসব কথা বলেন মাইলস্টোন স্কুলের দিয়াবাড়ী ক্যাম্পাসের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর খান।
অধ্যক্ষ বলেন, আমি পৌনে দুই বছর ধরে এই কলেজের দায়িত্বে আছি। কোনো দিন একটার সময়, ছুটির সময় আমি বাইরে যাই না। আমি বারান্দায় দাঁড়াই… ওই দিন প্রধান শিক্ষিকা ডেকে নিয়ে গেলেন, ১টার সময়, দুজন নতুন শিক্ষকের সাক্ষাৎকার নেবেন। দুপুর ১টা ৪ মিনিটের দিকে বের হয়ে সেখানে গেলাম। আর ১টা ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মাঝামাঝি সময়ে দুর্ঘটনা ঘটল। না হলে হয়তো আমিও লাশ হতে যেতাম।
তিনি নিহত শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন বলেন, যদি দুর্ঘটনাটি আরও কয়েক মিনিট আগে ঘটত, তাহলে আরও অনেক বড় ক্ষতি হতে পারত, কারণ ছুটির পর শিক্ষার্থীরা বের হতে সময় নেয়। অধ্যক্ষ উদ্ধারকাজে শিক্ষকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং যে কোনো অবহেলার দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন। অনুষ্ঠানে নিহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র জারিফ হাসানের বাবা হাবিবুর রহমান জানান, সেদিন জারিফ স্কুলে যেতে চায়নি এটা তার মা বলেছে। জারিফ খুব চটপটে ও বন্ধুসুলভ ছিল বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।