মুসা বিন শমসের কিচ্ছু নেই, ভুয়া লোক অন্তঃসারশূন্য : ডিবি অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১২:৪৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০২১ স্ত্রী ও ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয়ে হাজির হন আলোচিত ধনকুবের মুসা বিন শমসের। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার আবদুল কাদেরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের তিনটি বিষয়ে স্পষ্ট হতে মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ডিবি। ১২ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় মেরুন কালার একটি গাড়িতে করে মুসা বিন শমসের রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বলে জানিয়েছেন ডিবির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান। গাড়িতে মুসা বিন শমসেরের স্ত্রী শারমিন চৌধুরী ও ছেলে জুবেরী হাজ্জাজকে দেখা গেছে। এরপর তাদের ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি কার্যালয় থেকে বের হন ৬টা ৫৫ মিনিটে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের জানান, আমার কাছে মনে হয়েছে উনি (মুসা) অন্তঃসারশূন্য মানুষ। উনাকে একটা ভূয়া লোক মনে হয়েছে। উনার কিচ্ছু নাই। গুলশানে একটি বাড়ি আছে তাও স্ত্রীর নামে। বাংলাদেশে তার নামে আর কিছু পাইনি। তবে উনি মুখরোচক গল্প বলে। হারুন অর রশীদ বলেন, অতিরিক্ত সচিব পরিচয়দানকারী আবদুল কাদেরের প্রতারণার দায় মুসা বিন শমসের এড়াতে পারবেন না। তিনি (মুসা বিন শমসের) প্রতারক কাদেরকে তার আইন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তাকে ২০ কোটি টাকার চেক দিয়েছেন। তাকে ‘বাবা’, ‘সোনা’ বলেও ডাকতেন। জিজ্ঞাসাবাদে মুসা বিন শমসের দাবি করেছেন তিনি কাদেরের প্রতারণার বিষয়ে কিছু জানেন না। আমরা তাকে বলেছি, একজন নাইন পাস লোককে আপনি না বুঝে কীভাবে নিয়োগ দিলেন, তার কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা নিয়ে কীভাবে লাভসহ ২০ কোটি টাকার চেক দিলেন? এ ছাড়াও মুসা সাহেব কাদেরের সম্পর্কে বেশি জানেন না বললেও আমরা তার সঙ্গে কাদেরের অজস্র কথপোকথন পেয়েছি। প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও ডাকা হতে পারে। এদিকে ডিবি কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিকদের মুসা বিন শমসের বলেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ভুয়া অতিরিক্ত সচিব আবদুল কাদের একজন মিথ্যাবাদী। আমিও প্রতারণার শিকার হয়েছি। এ ভুয়া অতিরিক্ত সচিবের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব, তার বিরুদ্ধে মামলা করব। তবে ডিবি সূত্র জানিয়েছে, ভুয়া অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার আবদুল কাদেরের সঙ্গে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মুসা বিন শমসেরকে। মুসা বিন শমসেরের আইন উপদেষ্টা ছিলেন প্রতারক আবদুল কাদের। কাদেরের প্রতিষ্ঠানে শমসেরের একাধিক ছবি টাঙানো ছিল। তিনি নিজেকে শমসেরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাডভাইজার হিসেবে পরিচয় দিতেন। প্রতারক কাদেরের কাছ থেকে মুসা বিন শমসের ও তার স্ত্রীর সঙ্গে করা কিছু চুক্তিপত্র জব্দ করা হয়। এসব বিষয় জানতেই মূলত শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ডিসি মশিউর রহমান বলেন, আবদুল কাদের চৌধুরীর আসল নাম, আবদুল কাদের মাঝি। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দশম শ্রেণি। কিন্তু তিনি প্রতারণামূলকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে নিজেকে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পরিচয় দিতেন। নিজের ১ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রাডো গাড়িতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্টিকার লাগিয়ে সচিবালয়ে ঢুকতেন। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এভাবে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নানা অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ অক্টোবর মিরপুর ৬ নম্বরের বাসা থেকে বাইরে যাওয়ার সময় গ্রেফতার হন কাদের। একই সঙ্গে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন, সততা প্রোপার্টিজের চেয়ারপারসন ও আবদুল কাদেরের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী ছোঁয়া, অফিস ম্যানেজার শহিদুল আলম ও অফিস সহায়ক আনিসুর রহমান। Related posts:প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষা করবে সরকার: ড. ইউনূসপরিস্থিতির আরও অবনতি হলে আবাও বিধিনিষেধ : প্রতিমন্ত্রী১ কোটি ৬০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে সরকার Post Views: ৩১৭ SHARES জাতীয় বিষয়: