আজ উদ্বোধন : দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি বদলে দেবে পায়রা সেতু অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২১ নদী ও সাগর বিধৌত দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি বদলে দেবে স্বপ্নের পায়রা সেতু। নতুন করে জমে উঠবে এ এলাকার পর্যটনশিল্প। ব্যস্ততা বাড়বে পায়রা বন্দরের। সহজ হবে যোগাযোগব্যবস্থা। এখানে গড়ে উঠছে কল-কারখানা, হোটেল-মোটেল। সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে। শুধু তা-ই নয়, ঢাকার সঙ্গে বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের সময়ের দূরত্ব কমিয়ে আনবে এই সেতু। দৃষ্টিনন্দন এই সেতুর ফলে পটুয়াখালী-বরগুনা জেলাসহ উপকূলীয় ১০ উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন দেখা যাবে। এ জন্য এই লেবুখালী সেতুকে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য আশীর্বাদ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পদ্মা সেতু চালু হবে। এরপর ঢাকা থেকে কুয়াকাটা ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগে নবদিগন্ত সূচনা হবে। পায়রা সেতু চালু হলে পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দর, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, ইপিজেড ও কৃষিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ দেশের অর্থনীতিতে সেতুটি ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। পর্যটন খাতেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন এলাকাবাসী। ফলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে এই সেতু। আজ ২৪ অক্টোবর থেকে যাত্রা শুরু হচ্ছে স্বপ্নের পায়রা সেতুর (লেবুখালী সেতু)। পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের পায়রা নদীর ওপর সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন স্বপ্নের পায়রা সেতুর। উদ্বোধনের পরই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চার লেনের এই সেতুটি। পায়রা সেতুর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবদুল হালিম গতকাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, সেতুটিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। এতে রয়েছে অটো হেলথ মনিটরিং সিস্টেম। যার ফলে ভূমিকম্প, বজ্রপাতসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা ওভারলোডেড গাড়ির কারণে ক্ষতি এড়াতে পূর্বাভাস মিলবে। নদীর মধ্যে এবং পাশে থাকা পিয়ারে যাতে কোনো নৌযান ধাক্কা দিতে না পারে সে জন্য পিয়ারের পাশে নিরাপত্তা পিলার স্থাপন করা হচ্ছে। জানা গেছে, কর্ণফুলী সেতুর আদলে নির্মিত লেবুখালী সেতুর মূল অংশের শতভাগ কাজ শেষ হয় প্রায় এক মাস আগে। নদীশাসনের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। এই সেতুটি চালু হলে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে। এই সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে শরীয়তপুরের কাঁঠালবাড়ী থেকে সরাসরি কুয়াকাটার সঙ্গে প্রায় ২১৩ কিলোমিটার সড়কের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এর মাধ্যমে স্থানীয়দের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, পর্যটনশিল্পের বিকাশ এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরের ব্যবহার বাড়বে, সর্বোপরি ঘটবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার শেষ ও পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের শুরুর অংশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত পায়রা নদীর ওপর সেতুটির অবস্থান। বরিশালের প্রান্তে সেতুটির পশ্চিম দিকে শেখ হাসিনা সেনানিবাসের অবস্থান। পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা থেকে এ সেতুটি ১৩৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বরিশাল নগরের রূপাতলী থেকে ২৯ কিলোমিটার, পটুয়াখালী শহর থেকে ১১ কিলোমিটার এবং সাগরকন্যা কুয়াকাটার বাস টার্মিনাল থেকে ৭৯ কিলোমিটার দূরে এ সেতুর অবস্থান। সেতুর উত্তর দিকে ওজন স্কেল এবং দক্ষিণ দিকে ইলেকট্রনিক টোল প্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে। পায়রা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা, যার ৮২ ভাগ অর্থ বহন করছে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট এবং এপেক ফান্ড। ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই শুরু হওয়া এ সেতুর ইতিমধ্যে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ১ হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের সেতুর উভয় পাড়ে প্রায় ৭ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক রয়েছে। নদীশাসনের কাজও প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। পায়রা সেতুর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবদুল হালিম চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘লনজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন’ সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করছে। Related posts:পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের ফের কোষাধ্যক্ষ হলেন ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার আনিসুর রহমান৩৫তম স্প্যানে দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর সোয়া ৫ হাজার মিটারনিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসছেন ৩ মন্ত্রী Post Views: ২৪৪ SHARES জাতীয় বিষয়: