নালিতাবাড়ীতে ২ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩ শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে চুরির অভিযোগে কিশোর মোশারফ হোসেনকে (১৭) নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ২ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এছাড়া বাবা ও ছেলেকে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দিনমজুর চাচাকেও ডেকে নিয়ে জমির চুক্তিনামা আদায় করারও অভিযোগও রয়েছে তদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে কিশোরের চাচা লাল মিয়া বাদী হয়ে ২ ইউপি সদস্যসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। গত বুধবার উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের ভটপুর-সিধুলি গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হাবিবুর রহমান ও মোজাম্মেল হক। পুলিশ, ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভটপুর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলামের বাড়ি থেকে গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) আলমিরা ভেঙে ১ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় তারা প্রতিবেশি দিনমজুর চাঁন মিয়ার ছেলে মোশারফ হোসেনকে সন্দেহ করেন। পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানকে জানানো হয়। এ নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুরের দিকে মোশারফকে ধরে নিয়ে পাশের সিধূলী গ্রামে জয়নাল আবদীনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান সহ স্থানীয় কয়েকজন মোশারফের দুই হাত পেছনে টেনে ঘরের বারান্দার খামের সাথে বেঁধে মারধর করেন। মারধরের একপর্যায়ে টাকা চুরির কথা স্বীকার করিয়ে তা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়। এরপর ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান পাশের আরেক ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোজাম্মেলকে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে যান। পরে কিশোরের পিতা দিনমজুর চাঁন মিয়াকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তাকেও পেটান ইউপি সদস্য মোজাম্মেল। এরপর পিতা-পুত্রকে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই কিশোরের দিনমজুর চাচা লাল মিয়াকেও ডেকে নেওয়া হয় ওই বাড়িতে। সেখানে নিয়ে ভাই-ভাতিজাকে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চুরি যাওয়া টাকা আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। এসময় লাল মিয়ার সম্পত্তির দুই লাখ টাকায় বিক্রি করার চুক্তিনামা করেন। ওই সময় জমির গ্রাম্য দলিল ইউপি সদস্যদের হাতে জিম্মা রেখে ভাই-ভাতিজা ও লাল মিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চুরি যাওয়া টাকার মালিক আমিনুলের স্ত্রী অঞ্জনা বেগম জানান, আমি দরজায় শিকল দিয়ে বাড়ির বাইরে গেলে শোকেসের ড্রয়ারে রাখা এক লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা চুরি হয়। এলাকায় ছোটখাটো সব চুরি মোশারফ করে থাকে। তাই আমাদের সন্দেহ হয় এ টাকা মোশারফই নিয়েছে। তবে এ বিষয়ে তাদের কোন সাক্ষী-প্রমাণ নেই বলে জানান অঞ্জনা ও বাড়ির লোকজন। ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেন বলেন,আমি টাকা চুরি করি নাই। সন্দেহ করে আমাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে বেঁধে মারধর করে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করে ভিডিও করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত চাচার জমির দাম ধরে গ্রাম্য দলিল করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী বলেন, হাতেনাতে না ধরে এবং কোনপ্রকার সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই এভাবে চুৃরির অভিযোগ তুলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে বেঁধে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। কোন ইউপি সদস্য এমনটা করতে পারেন না। অভিযোগ সম্পকে ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক মুঠোফোনে বলেন ,আমরা মোশারফকে ধরে নিয়ে বাঁধিনি মারধরও করিনি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটা সত্য নয়। তবে তিনি কিশোরের পিতাকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেন। ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন,পাবলিক ওই ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। আমি শুধু দুটি ছবি তুলেছি। পরে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করেছি। এর বাইরে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। এ ব্যাপারে কিশোরের চাচা লাল মিয়া বলেন, আজ সোমবার ২ মেম্বারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে তার সঠিক বিচার চাই। এক ছেলেকে সন্দেহ করে সবাইকে এই ভাবে অত্যাচার করা ঠিক হয় নাই। এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, বিষয়টি শুনেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। যদি আদালতে মামলা করে থাকেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। Related posts:শেরপুরে উমেন এন্ড ই কমার্স ফোরাম (WE) এর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসককে শুভেচ্ছাশেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি: নকলায় আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলশেরপুরের নকলায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বিআরডিবির চেক বিতরণ Post Views: ২২১ SHARES শেরপুর বিষয়: