শ্রীবরদীতে নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর পুকুরে মিলল দুই শিশুর লাশ

প্রকাশিত: ৬:৪১ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২৫

শেরপুরের শ্রীবরদীতে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ২০ ঘণ্টা পর একটি মৎস্য খামারের পুকুর থেকে দুই কন্যাশিশুর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার তাঁতীহাটি ইউনিয়নের বটতলা মৃধাবাড়ি এলাকা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলো—স্থানীয় রাজমিস্ত্রি মো. সেলিম মিয়ার মেয়ে সকাল আক্তার (৭) ও অটোরিকশা চালক স্বপন মিয়ার মেয়ে স্বপ্না খাতুন (৬)। তারা দুজনই স্থানীয় একটি নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর থেকে শিশু দুটিকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না স্বজনেরা। সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করে এবং মাইকিং করে সন্ধান চাওয়া হয়। বুধবার সকাল ৭টার দিকে স্থানীয়রা মৎস্য খামারের পুকুরে শিশু দুটির মরদেহ বিবস্ত্র অবস্থায় ভেসে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জানা গেছে, স্থানীয় শাখাওয়াত হোসেনের জমিতে তৈরি পুকুরটি লিজ নিয়ে মৎস্য চাষ করছেন মোস্তফা মিয়া নামের এক ব্যক্তি। এলাকাবাসীর দাবি, এটি একটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে। কারণ শিশুদের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে, পুকুরটি একাধিক পুকুরের ভেতরে এবং সেখানে শিশুদের গোসলের মতো পরিবেশ নেই। এ ছাড়া মাসখানেক আগে ওই পুকুরে আরেকজনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছিল বলে জানান তারা। ঘটনার সময় শিশুদের শরীরে কোনো পোশাক ছিল না এবং তাদের কাপড় এখনো পাওয়া যায়নি।
তবে নিহত সকাল আক্তারের মামা মো. সাগর মিয়া বলেন, সকালের মা ওই এলাকায় ব্র্যাক সেন্টারে হস্তশিল্পের কাজ করেন। সে কারণে সকাল সেখানে গিয়ে থাকতে পারে। গোসল করতে গিয়ে সে পানিতে ডুবে যেতে পারে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থানায় জানাই এবং নিজেও ঘটনাস্থলে যাই।
স্বপ্নার বাবা স্বপন মিয়া বলেন, আমি ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন থেকেই মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর আর ঢাকা যাইনি, সারা রাত মাইকিং করেছি। কিন্তু কোনো সন্ধান পাইনি। সকালে মেয়ের মরদেহ পেলাম, কীভাবে কী হলো বুঝতে পারছি না।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। আমি নিজেও সেখানে গিয়েছি। শিশু দুটির শরীরে কোনো পোশাক ছিল না। আমরা ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।