আরও একটি নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৮:৪৪ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০২৫ আরও একটি নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। শুক্রবার (২০ জুন) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আংশিক কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির আত্মপ্রকাশ হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী আয়াতুল্লাহ বাস্তি দলের নতুন নাম ঘোষণা করেন। এরপর শহীদ আনাসের মা সানজিদা খান দিপ্তী বেলুন উড়িয়ে দলের আত্মপ্রকাশ সম্পন্ন করেন। নতুন রাজনৈতিক দলটির নাম- বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টির (বিআরপি)। তাদের স্লোগান ‘সবার ওপরে দেশ’। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ‘সংস্কার না নির্বাচন, সংস্কার সংস্কার’, ‘দিল্লি না ঢাকা’, ‘ঢাকা ঢাকা’, আপস না সংগ্রাম’, ‘সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দালালি না রাজপথ’, ‘রাজপথ রাজপথ’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘রিপাবলিক রিপাবলিক জিন্দাবাদ’, ‘ ক্ষমতা না জনতা’, ‘জনতা জনতা’ প্রভৃতি স্লোগান দেন দলের নেতাকর্মীরা। বিআরপির ২৮ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন শহীদ আনাসের মা। এতে সভাপতি হয়েছেন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মেহেদী হাসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাঈদ আলী সিকদার, সহসভাপতি ক্যাপ্টেন শফিকুল ইসলাম (অব.), লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব. ইমরান), আয়াজ আহমেদ, অ্যাডভোকেট নাসিম উদ্দিন মোহাম্মদ বায়েজিদ, সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব.) মো. রাজিবুল হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান, সাজ্জাদ হোসেন ইউনুস, মো. আহসানুল্লাহ, প্রধান উপদেষ্টা মো. সেলিম প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর (অব.) রাকিবুল হাসান, কৃষিবিদ মঞ্জুর হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আবুল হাসানাত, মো. জাহিদুল ইসলাম, মুশফিকুর রহিম রনি, ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাসান, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট অলিদ আহমেদ, নারী ও শিশু সম্পাদক আনিকা তাসনীম খান, সহ-সম্পাদক মৌসুমী আত্মার সুমি, শ্রম সম্পাদক শাহাদাত হোসাইন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পাদক মেজর (অব.) শাহেদুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক সহকারী পরিচালক মো. জহিরুল হক, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, আপ্যায়ন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক-মোছা. শারমিন আক্তার মুক্তা, শিক্ষা সম্পাদক মো. রাহুল আমিন ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. সৌরভ চন্দ্র মজুমদার। এ সময় বিআরপির ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব সাজ্জাদ হোসেন ইউনূস। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি হবে একটি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল। সামষ্টিক কল্যাণ ও নাগরিক মর্যাদা হবে এর মূল লক্ষ্য। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বক্তব্য দেন। বক্তার বলেন, যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে দেশের ছাত্র-জনতা অংশ নিয়েছিল তা পূরণ হয়নি। মানুষের সেই আশা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এই দল গঠন করা হয়েছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ আর নতুন করে কেউ যাতে স্বৈরাচার হয়ে উঠতে না পারে সেজন্য কাজ করে যাবে বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি। বক্তব্যে বিআরপির প্রধান উপদেষ্টা সেলিম প্রধান বলেন, যারা দুর্নীতি, চাঁদাবাজির রাজনীতি করছে তাদের রাজনীতি আমি কঠিন করে তুলব। রাজনীতি কি সেটা আমরা দেখিয়ে ছাড়ব। ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমার একমাত্র ছেলেকে হারিয়েছি। আমার ছেলের যে ত্যাগ, তা যেন বৃথা না যায়। দুই হাজার প্রাণ ঝরে গেছে। সবার যে আশা আকাঙ্ক্ষা কতটুকু পূরণ হচ্ছে বা হবে সেটি নিয়ে রয়েছে সংশয়। বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি সেই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কাজ করবে এই প্রত্যাশা রইলো। শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়া খান পলাশ বলেন, আমাদের আনাসকে আমরা আর ফিরে পাবো না। যারা বেঁচে আছে তাদেরকে আল্লাহ ভালো রাখুন। খুনি হাসিনার বিচার আমরা চাই। বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হচ্ছে না। হাসিনার যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তাদের খুঁজে খুঁজে বের করুন, বিচারের ব্যবস্থা করুন। সংবাদমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এসব হত্যাকাণ্ডের জড়িত সবাইকে গণমাধ্যমে তুলে ধরে বিচার নিশ্চিত করুন। সাবেক সেনাকর্মকর্তা রাজিব আহমেদ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ব্যবসা করছে। এটি কোনো প্রাক্তন ছায়ায় গড়ে ওঠা দল নয়। শিক্ষক, আইনজীবী, সাবেক আমলা সবাই এখানে এসেছে তাদের প্রাপ্য সম্মান বুঝে নেওয়ার জন্য। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান হবে সরকারের মূল লক্ষ্য। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আমাদের কাছে আসুন। আমরা মানবিক রাষ্ট্র গঠন করার জন্য রাজনীতি করতে এসেছি। এই দেশ আমাদের। আমরা সবাই এক হলে কেউ আমাদের আটকিয়ে রাখতে পারবে না। সব বিভেদ ভুলে সবাই এক হোন। সমাপনী বক্তব্যে পিআরপির সভাপতি লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মেহেদী হাসান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুধু স্বৈরাচার পরিবারের বিরুদ্ধে নয়। জুলাইয়ের পরে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমাদের আশা ছিল নতুন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দেখব। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মূল স্পিরিট থেকে আমরা অনেকটা সরে গেছি। আমাদের নিজেদের জায়গা থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা জনগণের রাজনীতি করতে এসেছি। বাংলাদেশ পন্থি রাজনীতি করতে চাই। সবার সাথে ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে চাই। আমরা কাজের রাজনীতি করতে চাই, কথার রাজনীতি করতে চাই না। আমাদের দলে চোখ রাখুন, বিআরপি কি করছে এবং কেন আসছে। প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, শুধু একটা নির্বাচন দিয়ে চলে যাবেন এজন্য জনগণ আপনাকে বসায়নি। আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) সংস্কারের আগে রোডম্যাপ প্রকাশ করুন, এরপর নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। সংস্কার ছাড়া আপনি যদি নির্বাচন দিয়ে চলে যান তাহলে দেশের মানুষ বলবে, আপনিও ব্যর্থ। কারও কাছে আপনি মাথা নত করবেন না। আমরা সবাই আপনার সাথে আছি। তিনি বলেন, এই দেশকে কারও কাছে বিক্রি করে দেওয়া এবং দেশের প্রশ্নে কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া যাবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, জনগণ যেভাবে চায় আপনাদের রাজনীতি সেভাবে সাজান। জনগণ জানে কাকে এবং কেন ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনতে হবে। Related posts:বিএনপি দিন-রাত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন : ওবায়দুল কাদেরবিএনপি এখন জাতীয় হতাশাবাদী দলে রূপ নিয়েছে : কাদেরদুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় হবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Post Views: ৩৪ SHARES রাজনীতি বিষয়: