গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় মামলা, আসামি ৪ শতাধিক

প্রকাশিত: ১০:০৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২৫

গোপালগঞ্জে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের হামলা এবং সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় চার শতাধিক জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে গোপালগঞ্জ সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক আহম্মদ আলী বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সদর থানায় মামলাটি করেছেন।

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালসহ এজাহারনামীয় ৭৫ জন। বাকি আরও ৪০০ জন অজ্ঞাতনামা। অর্থাৎ, মোট আসামি ৪৭৫ জন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. রুহুল আমিন সরকার।
এর আগে গত বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কের উন্মুক্ত মঞ্চে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি পালন করতে যায় ছাত্রদের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সেখানে সভা শুরুর আগে এক দফা হামলা চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ।
এই হামলার পরও সমাবেশে যোগ দেন এনসিপির নেতারা। এরপর সমাবেশ শেষ হলে ফের তাদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। ভাঙচুর করা হয় নতুন এ দলটির গাড়িবহর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এগিয়ে গেলে তাদের উপরও হামলা হয়।এরপরই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা পুলিশ সদস্যদের দিকে ইট-পাটকেল ছোড়ে, ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেয় পুলিশের গাড়ি।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের চার কর্মীসহ পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। এছাড়া যৌথ অভিযানে আটক হয়েছে ২০ জন। এবার হলো পুলিশবাদী মামলা।
এদিকে সংঘর্ষের জেরে বুধবার থেকেই থমথমে গোপালগঞ্জ শহর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে সরকার। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় শহরজুড়ে জারি করা হয় কারফিউ।
প্রথমে বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৬টা পর্যন্ত চলে সরকার ঘোষিত ২২ ঘণ্টার কারফিউ। এরপর কারফিউয়ের মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার (১৮ জুলাই) বেলা ১১টা পর্যন্ত জারি ছিল কারফিউ। ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা কারফিউ শিথিল করে সরকার।
এরপর দুপুর ২টা থেকে ফের শুরু হয়েছে কারফিউ, চলবে বিকেল ৬টা পর্যন্ত। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই অবস্থা চলতে থাকবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে কারফিউয়ের আওতায় রয়েছে গোপালগঞ্জ।