সাবেক এমপি শ্যামলী, শেরপুরের একজন মানবতার ফেরীওয়ালা অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১১:৫২ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০২০ করোনা পরিস্থিতিতে নিজস্ব তহবিল থেকে সহায়তা পেলেন ২৬ হাজার ৩শ মানুষ অসহায় মানুষ মাহবুবা রহমান শিমু (সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার) ॥ করোনা ভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের পরিস্থিতিও ভয়াবহ। চলছে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি, বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ লকডাউনে সারাদেশের সাথে কর্মহীন হয়ে পড়েছে শেরপুরের দরিদ্র-অসহায় ও নিম্নবৃত্ত মানুষ। তাদের জীবন কাটচ্ছে চরম দূর্ভোগে। ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিরলসভাবে কাজ করছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। করোনাজনিত ক্রান্তিকালে সরকার প্রধান ও তার দল আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের অনেকেই বসে আছেন হাত গুটিয়ে। শেরপুর সদর উপজেলা ও পৌরসভার অসহায় মানুষের কল্যাণে ব্যতিক্রমী হয়ে কাজ করে চলছেন আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি, জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, আদরজান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, সাপ্তাহিক শ্যামলী শেরপুর ও শ্যামলী নিউজ ২৪ ডটকমের সম্পাদক-প্রকাশক এডভোকেট ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলী। তিনি বর্তমানে দায়িত্বশীল বা সংসদ সদস্য না হয়েও সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের অসহায় হতদরিদ্র ও নিম্নবৃত্ত মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করে হাজার হাজার মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে মানবতার সেবায় এক অনন্য ফেরীওয়ালা হিসেবে সুখ্যাতি পেয়েছিন সাবেক এই এমপি শ্যামলী। শেরপুরের এক ঐতিহ্যবাহী শ্রমিকবান্ধব পরিবারের সন্তান এডভোকেট ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলী। পিতা প্রয়াত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, রাজনীতিক ও জেলা ট্রাক মিনি ট্রাক ট্যাংকলড়ী কভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের এক যুগের সফল সভাপতি মরহুম সেলিম রেজার একমাত্র কন্যা শ্যামলী পারিবারিক সূত্রে ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। রাজধানী ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করার পর শেরপুরে এসে জেলা যুব মহিলা লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনের এক কঠিন সময়ে দায়িত্ব পান ওই সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে। সেই থেকে জেলা শহরসহ ইউনিয়ন পর্যায়েও ছুটে বেরিয়েছেন। দলের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে করেছেন অংশ গ্রহণ। ওই অবস্থায় ২০০৯ সালে সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে অংশ নিয়ে নানা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কারণে হারলেও তার পরিচিতির পাশাপাশি ধাপে ধাপে বেড়ে যায় জনপ্রিয়তা। সেইসাথে পিতার মৃত্যুজনিত কারণে পরিবারসহ পৈত্রিক ব্যবসার হাল ধরায় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই একজন যুব ও নারী উদ্যোক্তা হিসেবেও পেয়ে যান পরিচিতি। এমনই সফলতার ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদে শেরপুর-নেত্রকোনা সংরক্ষিত আসনে শেরপুরের ইতিহাসে স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো সংরক্ষিত সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হন। এত ঝামেলা-ব্যস্ততার পরও প্রয়াত বাবার ইচ্ছে পূরণে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভূক্ত হন এবং শেরপুর বারের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। এদিকে এডভোকেট ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর শেরপুর পৌরসভা ও সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নসহ অপর দু’টি নির্বাচনী এলাকাতেও শ্যামলীর বিচরণ ও সহায়তা ছিল অকৃপণ। সরকারি স্বাভাবিক বরাদ্দের পরও নিজের চেষ্টা-তদবিরে অনেক এলাকায় বহু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে রেখেছেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর। এরপরও বরাদ্দের তুলনায় চাহিদা পূরণ সম্ভব না হলে ব্যয় করেছেন ব্যক্তিগত অর্থ। তার উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বাদ যায়নি শতশত শিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ জেলা আইনজীবী সমিতি ও সহকারী আইনজীবী সমিতিও। কিন্তু এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা থেকে সংরক্ষিত নারী এমপি মনোনীত হওয়ায় বাদ পড়ে যান এডভোকেট শ্যামলী। এতে তিনি নিজে যতটুকু ব্যথিত হয়েছেন, তার চেয়ে বেশি ব্যথিত হয়েছেন এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ, যাদের অনেকেই শ্যামলীর মানবিক সেবায় উপকৃত। কিন্তু এরপরও থেমে থাকেননি শ্যামলী। সরকারি দায়িত্বে না থেকেও ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অর্থায়নে লাগাতার চালিয়ে যাচ্ছেন নানা সেবামূলক কর্মকাণ্ড। গত ঈদুল ফিতর, কোরবানীর ঈদসহ বাংলা নববর্ষ উদযাপনে যুব মহিলা লীগসহ বিভিন্ন পর্যায়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মূল্যায়নের পাশাপাশি হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষকে করেছেন সহায়তা। কখনও বা এগিয়ে গেছেন আর্তমানবতার সেবায়, দাঁড়িয়েছেন পাশে। এরপরও দলীয় কর্মকাণ্ডসহ জাতীয় দিবসগুলো উদযাপনে রেখেছেন বিশাল ভূমিকা। দেশের এই চলমান উন্নয়ন যাত্রায় বাধা হয়ে এসেছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। ভাইরাসটির সংক্রমণে দীর্ঘ প্রায় ২ মাস যাবত অফিস-আদালত, কল-কারখানা বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া কৃষি নির্ভর শেরপুরের হতদরিদ্র অসহায় মানুষগুলোর সেবায় প্রথম থেকেই ব্যাপক ভাবে কাজ করছেন সাবেক এমপ শ্যামলী। করোনা পরিস্থিতির প্রথমভাগে সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে করোনা মোকাবেলায় জনসচেতনতা বাড়াতে অসহায় পরিবারগুলোর মাঝে মাস্ক, সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন। এরপর ব্যক্তিগত তরফ থেকে দেন প্রায় ৩ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা। কেবল তাই নয়, করোনা পরিস্থিতির কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে এবার রমজানে ইফতার মাহফিল বা পার্টি বন্ধ থাকায় তার তরফ থেকে নেওয়া হয় এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আর সেই উদ্যোগের আওতায় রমজানের ৩০ দিনে প্রতিদিন ১৫ হাজার প্যাকেট ইফতারী পৌঁছে দেওয়া হয় সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে। এটি শুধু শেরপুরে নয়, পরিবর্তিত অবস্থায় খোদ বাংলাদেশেই এক অনন্য বিরল দৃষ্টান্ত। ফলে তার এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ও আয়োজনটি এখন মানুষের মুখে মুখে। তিনি নিজেও ভাসছেন হাজার হাজার মানুষের প্রশংসায়। এছাড়া গণমাধ্যম কর্মী, স্বেচ্ছাসেবী ও ইমাম-মুয়াজ্জিনদের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন প্রায় ৩শ পিপিইসহ (প্রাইভেট প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) অন্যান্য অনুসঙ্গ। কেবল তাই নয়, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই মুসলিম উম্মাহর সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর সমাগত হওয়ায় ২১ মে থেকে ৩ দিনব্যাপী অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের মাঝে নিজ হাতে বিতরণ করেছেন প্রায় ৬ সহস্রাধিক ঈদবস্ত্র। এছাড়া নানা পর্যায়ে পাঠিয়েছেন ঈদ উপহার ও আর্থিক সহায়তা। আর এ সবকিছু মিলে বিশেষ করে এবারের কঠিন পরিস্থিতিতে পুনঃপুন সহায়তা অব্যাহত রাখায় তার নাম এখন মানুষের মুখে মুখে। সেইসাথে তার নামের আগে সমস্বরে উচ্চারিত হচ্ছে মানবতার এক ফেরীওয়ালা হিসেবে। সাবেক এমপি শ্যামলীর মানবিক সহায়তা প্রসঙ্গে আদরজান ফাউণ্ডেশনের কর্মকর্তা, সাপ্তাহিক শ্যামলী শেরপুর ও শ্যামলী নিউজ ২৪ ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক মোঃ উমর ফারুক বলেন, এডভোকেট ফাতেমাতুজ্জরা শ্যামলী পৈত্রিক সূত্রেই উদারনৈতিক ও দানশীল মনমানসিকতার অধিকারী। যে কারণে এবার জনপ্রতিনিধি না হয়েও করোনার মতো কঠিন পরিস্থিতিতে কেবল নিজস্ব অর্থায়নে এলাকার হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি আরও জানান সাবেক এমপি শ্যামলী প্রকৃত অর্থেই একজন জনদরদী মানুষ। মানুষের দুঃখ-কষ্টের সময় তিনি কখনোই নিজেকে আড়ালে রাখতে পারেন না। সবসময়ই নিজের সামর্থ অনুযায়ী ঝাঁপিয়ে পড়েন তাদের সেবায়। আর এজন্য এবার কঠিন পরিস্থিতিতে তার তরফ থেকে পুরো রমজানজুড়ে প্রতিদিন ৫শ করে হিসেবে ১৫ হাজার মানুষের হাতে ইফতারী, ৫ হাজার মানুষের মাঝে মাস্ক-সাবান, প্রশাসনের সাথে কাজ করা জেলার সাংবাদিক, স্বেচ্ছাসেবীসহ ৩শ মানুষের মাঝে পিপিই এবং ৬ সহস্রাধিক হতদরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে ঈদবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এরপরও দলীয় নেতা-কর্মীসহ নানা পর্যায়ে প্রায় ১ হাজার মানুষকে ঈদ উপহারসহ দেওয়া হয়েছে আর্থিক সহায়তা। এ ব্যাপারে সাবেক এমপি এডভোকেট ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি শ্যামলী নিউজ ২৪ডটকমকে বলেন, শেরপুরবাসীর যেকোন উৎসব-দুর্যোগ-সংকটে আমাদের সহযোগিতা থাকে। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষায় এবার জনপ্রতিনিধি না হয়েও প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনায় করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমার নিজ তহবিল থেকে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ড পরিচালনাসহ লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে হতদরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছি। প্রতিদিন পর্যায়ক্রমে পৌরসভাসহ প্রতিটি ইউনিয়নে ইফতারী পৌঁছানোসহ খাদ্য সহায়তা এবং ঈদবস্ত্র বিতরণ করেছি। শেরপুরের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আমার ভালো লাগে। চলমান করোনা পরিস্থিতিসহ যেকোন দুর্যোগ আর উৎসবে আমার নিজ তহবিল থেকে সার্বিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে। তিনি জেলায় কর্মরত সকল সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী, সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সেইসাথে সকলের সুখ-সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করেন তিনি। Related posts:নকলায় প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী উদ্বোধনশ্রীবরদীতে প্রান্তিক দলের প্রতিনিধিদের সাথে সংযোগ তৈরি বিষয়ক কর্মশালাঝিনাইগাতীতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে লিফলেট ও সাবান বিতরণ Post Views: ৭৫৯ SHARES বিশেষ সংবাদ বিষয়: