ফিলিস্তিনের বিজয়ে সবচেয়ে বড় অংশীদার ইরান : হামাস প্রধান অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ, মে ২২, ২০২১ আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি আগ্রাসন প্রতিরোধে ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস যোদ্ধাদের অস্ত্র, প্রযুক্তি ও অর্থ সহায়তা দেয়ায় ইরানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল হানিয়া। তিনি বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের বিজয়ে ইরান সবচেয়ে বড় অংশীদার।’ শুক্রবার (২১ মে) হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর গাজায় আয়োজিত এক জনসভায় দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। ইসমাইল হানিয়া বলেন, ‘ইহুদিবাদীদের আগ্রাসন মোকাবিলা, জেরুজালেম, আল-কুদস ও আল-আকসার পবিত্রতা রক্ষায় আকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান। তারা আমাদের বিজয়ের বড় অংশীদার। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আশা করি মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোও দ্রুত গাজার মুসলিম ভাইদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে।’ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘কৌশলগত ও ঐশী বিজয়ের’ দাবি করে ফিলিস্তিনের জনগণকে অভিনন্দন জানান ইসমাইল হানিয়া। তিনি বলেন, ‘গাজার প্রতিরোধ সংগঠণগুলোর বীরোচিত ও সাহসী ভূমিকার কারণে এ বিজয় অর্জিত হয়েছে। তারা ইহুদিবাদীদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে।’ হামাস প্রধান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্পষ্ট। আমরা জেরুজালেম ও আল-আকসার পবিত্রতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। পবিত্র ভূমিতে দখলদার ও ইহুদিবাদীদের প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। শেখ জাররাহ থেকে আমাদের ভাই-বোনদের বিতাড়িত করতে দেব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জেরুজালেম, আল-কুদস শরীফ ও আল-আকসা রক্ষায় সাড়ে চার হাজারের বেশি রকেট ছুঁড়তে সক্ষম হয়েছি। ইহুদিবাদীদের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছি। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাহসী ও বীরোচিত ভূমিকায় তারা (ইসরায়েলি বাহিনী) ভীত।’ নিহতরা পবিত্র ভূমি রক্ষায় ‘শহীদ’ হয়েছেন উল্লেখ ইসমাইল হানিয়া বলেন, ‘হতাহতদের প্রতি আমার গভীর শোক ও সহমর্মিতা জানাচ্ছি। আমরা তবহিল সংগ্রহ করছি। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আমার ভাই-বোনেরা যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা সহায়তা দেবে হামাস। যাদের ঘর-বাড়ি ধ্বংস করেছে ইহুদিরা, তাদেরকে আমরা বাড়ি করে দেব।’ এদিকে, যুদ্ধবিরতির পর গাজায় সংবাদ সম্মেলন করেছে ইসলামি জিহাদের সামরিক শাখা আল-কুদস। আল-কুদস ব্রিগেডসের মুখপাত্র আবু হামজা বলেন, ‘আমরা ইহুদিবাদী শত্রু ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছি। ইসরায়েলের অস্তিত্বের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘এবারের সংঘাতে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা সামরিক শক্তির সামান্য অংশ প্রদর্শন ও ব্যবহার করেছে মাত্র। গোটা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ইহুদিদের হাত থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রতিরোধ সংগ্রাম চলবে।’ এসময় তিনি আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ায় ইরানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা পুননির্মাণে মুসলিম দেশগুলো প্রতি আর্থিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার এক বিবৃতিতে খামেনি বলেন, মুসলিম দেশগুলোকে অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা উচিত। তাদেরকে আর্থিক এবং সামরিক সহায়তা দেয়া উচিত। পাশাপাশি ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া গাজা পুননির্মাণে ব্যাপক সহায়তা প্রয়োজন।’ পূর্ব জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদ চত্ত্বরে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের জের ধরে গত ১০ মে থেকে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরু হয়েছে। টানা ১১ দিন তাণ্ডব চালিয়ে শুক্রবার (২১ মে) মধ্যরাত থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে সম্মত হয় ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ২৩২ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৫ জন শিশু। আহত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি। গাজার বড় এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, গাজায় হামাস ও অন্যান্য ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীরা প্রায় ৪ হাজার ৩০০ রকেট ছুড়েছে। এসব রকেট হামলা আয়রন ডোমের মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে। তবে ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, হামাসের রকেট হামলায় ইসরায়েলে ১২ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন শিশু, একজন ইসরায়েলি সেনা, একজন ভারতীয় নারী এবং দু’জন থাইল্যান্ডের নাগরিক রয়েছেন। ২০১৪ সালের পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে এবারের সংঘাতকে বলা হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত। ২০১৪ সালের ওই সংঘাতে দুই হাজার ২৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। ইসরায়েলের পক্ষে প্রাণহানি ছিল ৭৪, যাদের অধিকাংশই সেনাসদস্য। Related posts:বিশ্বে করোনায় মৃত্যু বেড়ে ৫ লাখ ৬৪ হাজার১৮ আরোহী নিয়ে কঙ্গোতে বিমান বিধ্বস্তহংকংয়ের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে নাগরিকত্ব দেয়ার ঘোষণা ব্রিটেনের Post Views: ১৮৪ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: