তালেবানের নেতৃত্বে আসছে যারা অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১২:০৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৬, ২০২১ অনলাইন ডেস্ক : একের পর এক শহর দখলের পর এবার রাজধানী কাবুল নিজেদের করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান যোদ্ধারা। তবে এর পেছনে আসলে কে? এই প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই রহস্যে ঘেরা! এমনকি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যখন এই গোষ্ঠীটি ক্ষমতায় ছিল; তখনও জানা যেত না তালেবানের কলকাঠি নাড়ছে কে! কট্টরপন্থী ইসলামি দল তালেবানের নেপথ্যের নেতৃত্ব নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম ডন। এতেই উঠে এসেছে কয়েকজনের নাম। তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম প্রধান নেতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমর। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। মোল্লা ওমর মারা যান ২০১৩ সালে। এরপর আরও কয়েকজন আসে এই গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রক হিসেবে। হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা: তালেবানের বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা। তালেবানের রাজনৈতিক, সামরিক ও ধর্মীয়সহ যে কোনো বিষয়ে তার রায়ই চূড়ান্ত। ইসলামী আইন বিষয়ে পণ্ডিত এই ব্যক্তি অধীনদের কাছে ‘বিশ্বাসীদের নেতা’ হিসেবে পরিচিত। ২০১৬ সালে মার্কিন ড্রোনের আঘাতে তালেবানের তৎকালীন প্রধান আখতার মনসুর মারা যাওয়ার পর নেতৃত্ব হাতে তুলে নেন আখুনজাদা। এর আগে ১৫ বছর ধরে পাকিস্ততানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শহর কুচলাকের একটি মসজিদে শিক্ষকতা ও ধর্মপ্রচার করতেন তিনি। ২০১৬ সালে তালেবানকে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেন তিনি। ধারণা করা হয়, আখুনজাদার বয়স ৬০-এর আশপাশে। তার অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। মোল্লা আবদুল গনি বারাদার তালেবান গোষ্ঠীর জন্ম যে স্থানে সেখানেই বেড়ে উঠেছেন মোল্লা আবদুল গনি বারাদার। মোল্লা ওমরের অন্যতম বিশ্বস্তত সহচর ছিলেন এই বারাদার। এ ছাড়া তালেবানের অন্যতম সহপ্রতিষ্ঠাতা তিনি। তালেবানের রাজনৈতিক বিষয়ের প্রধান বারাদার তার সাম্প্রতিক সময়ের বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য বেশ আলোচিত। কাতারের রাজধানী দোহায় যুদ্ধবিরতি এবং আফগানিস্ততানে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি রাজনৈতিক চুক্তির জন্য যে আলোচনা হয়েছে, তাতে তালেবানের পক্ষে অন্যতম প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। কয়েক মাস ধরে চলমান এই আলোচনায় উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। বর্তমানে চীনের সঙ্গে তালেবানের সম্পর্কোন্নয়নে তার জোরালো ভূমিকা রয়েছে। ২০১০ সালে পাকিস্ততানের করাচিতে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ২০১৮ সালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। সিরাজউদ্দিন হাক্কানি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখা মুজাহিদিন নেতা জালালউদ্দিন হাক্কানির ছেলে সিরাজউদ্দিন হাক্কানি।। তিনি ‘হাক্কানি নেটওয়ার্ক’-এর প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মোটামুটি সংগঠিত এই নেটওয়ার্কের কাজ হচ্ছে আফগান-পাকিস্ততান সীমান্তে তালেবানের সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পদ তদারকি করা। আফগানিস্ততানে আত্মঘাতী বোমা হামলার সূত্রপাতের জন্য এই হাক্কানিদের দায়ী করা হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আফগানিস্ততানে সংঘটিত অনেক ভয়াবহ তালেবান হামলার পেছনে এই নেটওয়ার্কের হাত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কাবুলের বিলাসবহুল হোটেলে আক্রমণ, সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাইকে হত্যাচেষ্টা এবং ভারতীয় দূতাবাসে আত্মঘাতী হামলা। হাক্কানির বয়স সম্ভবত ৩০ থেকে ৪০-এর মাঝামাঝি। তার অবস্থান সম্পর্কেও কেউ কিছু বলতে পারে না। মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব। তালেবানের সামরিক বিভাগের দেখাশোনা করেন তিনি। তাকে তালেবান গোষ্ঠীর সামরিক প্রধানও বলা যায়। ইয়াকুব বর্তমানে আফগানিস্ততানের ভেতরেই আছেন। তালেবানের নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দলের সময় তালেবানের সম্ভাব্য প্রধান হিসেবে বেশ কয়েকবার উঠে এসেছে তার নাম। কিন্তু বয়সে তরুণ এবং যুদ্ধের অভিজ্ঞতা কম হওয়ায় তিনি নিজেই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। ২০১৬ সালে দলীয় প্রধানের পদে হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদার নাম ইয়াকুব নিজেই সুপারিশ করেন। প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, ইয়াকুবের বয়স ৩০-এর কাছাকাছি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সেনা প্রত্যাহার করতে আফগান তালেবানের সঙ্গে চুক্তি সই হয় ওই সময়। তবে জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার পুরোপুরি শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করেন। সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে এরই মধ্যে।এমন পরিস্থিতিতেই তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ভয়াবহ হামলার পর আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ধরতে আফগানিস্তানে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী। এরপর দুই দশকের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী এবং পরে তাদের সহায়তায় গড়ে ওঠা আফগান সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের যুদ্ধ চলে আসছিল। সর্বশেষ গত ১ মে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পর তালেবানের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। Related posts:এগুলো আপনাকে মানায় না : শ্রাবন্তীর উদ্দেশে ভক্তরাগাজার এ পরিস্থিতির জন্য ট্রাম্প দায়ী: হামাসভারত সরকারের বিরুদ্ধে হোয়াটসঅ্যাপের মামলা Post Views: ১৬৬ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: