মালয়েশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা, ঘরছাড়া ৩০ হাজার মানুষ অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১২:২৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২১ রেকর্ড বৃষ্টিতে মালয়েশিয়ায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে দেশটির আটটি প্রদেশ থেকে ঘর ছাড়া হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুস। জানা গেছে, দেশটিতে আটটি প্রদেশে ৪৮ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। ফলে গত কয়েক বছরের বৃষ্টিপাতের রেকর্ড তছনছ হয়ে গেছে। দেশজুড়ে ঘরছাড়া অন্তত ৩০ হাজার বাসিন্দা। তবে তাদের সকলকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এরই মধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব। তিনি জানান, শুক্রবার থেকে যে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তা দু’দিনেই এক মাসের বৃষ্টির রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছে। যার ফলে বেশির ভাগ নদীই উপচে পড়ছে। গ্রামীণ এলাকা তো বটেই, বেশ কিছু শহরও গত দু’দিন ধরে পানির নিচে চলে গেছে। হাইওয়েগুলোতে কোমর সমান পানি জমেছে। অনেক জায়গায় আটকে পড়েছে গাড়ি, বাস এমনকি ট্রাকও। পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ পাহাং প্রদেশের। শুধুমাত্র সেখানেই ১৪ হাজার মানুষকে নিজেদের ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে। রাজধানী কুয়ালা লামপুর সংলগ্ন সেলাঙ্গরের পরিস্থিতিও শোচনীয়। সেখানে প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সেলাঙ্গরের এমন পরিস্থিতি দেখে তিনি বিস্মিত। তার কথায়, “সেলাঙ্গরে কখনও বন্যা হতে দেখিনি। সেখানেও পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। সর্বত্র পানি জমে রয়েছে।’’ বন্যা ত্রাণে ইতিমধ্যেই ২.৩৭ কোটি ডলার প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইয়াকুব। তিনি জানিয়েছেন, বন্যা দুর্গতদের সাহায্যার্থে কাজ করছেন প্রায় ৬৬ হাজার পুলিশ ও দমকলকর্মী। তার আরও বক্তব্য, আপাতত রাস্তা, বাড়ি বা গাড়ির মধ্যে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়াই মূল লক্ষ্য প্রশাসনের। বৃষ্টির জন্য জল শোধনের কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে সেলাঙ্গরের তিনটি কেন্দ্রে। ফলে আগামী কয়েক দিন ওই প্রদেশের কোনও বাড়িতেই পানি পৌঁছবে না বলে জানানো হয়েছে। রাজধানী কুয়ালালামপুর ও তার সংলগ্ন এলাকার ডজনখানেক বাস রুট বন্ধ। ট্রেন সেবাও বন্ধ থাকায় বন্দর শহর ক্লাংয়ের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। খাবার ডেলিভারির কাজ করেন সেলাঙ্গরের শাহ আলম শহরের বাসিন্দা রোকিদা ইউসুফ। কাজের সূত্রে দুই কন্যা ও নাতি নাতনিকে নিয়ে সেলাঙ্গরের শহরতলিতে আটকে পড়েছিলেন রোকিদা। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পরে তাকে উদ্ধার করেন দমকলকর্মীরা। বছর ষাটেকের রোকিদা জানিয়েছেন, গত তিরিশ বছরে সেলাঙ্গরে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেননি তিনি। সাত বছর আগে, ২০১৪ সালের বন্যায় মালয়েশিয়ায় ঘরছাড়া হয়েছিলেন ১ লাখ ১৮ হাজার মানুষ। গত কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা ছিল সেটি। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ফ্রান্স২৪ Related posts:যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিক্ষোভে জনসমুদ্র, শ্লোগানে কাঁপছে বাগদাদআমেরিকায় মৃত্যুর মিছিলে একদিনে যোগ হল আরও ১১৬৫ লাশবিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ লাখ ছাড়াল Post Views: ২০৩ SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: