শেরপুরে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ৩:৪১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১, ২০২২

শেরপুরে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের নবীনগর মহল্লার শাওয়াল পীরের মাজারের উল্টোপাশের খালি জমিতে ওই ২শ বছরের পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী ওই পৌষ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। নবীনগর মেলা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ওই মেলায় হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুর ভিড় জমে।

জানা যায়, এ মেলা মূলত ৩০ পৌষ সংক্রান্তির মেলা হলেও কয়েক বছর ধরে মেলার স্থানে বোরো আবাদের জন্য সংক্রান্তির আগেই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই এ মেলা এখন ‘পৌষ সংক্রান্তি’ মেলা থেকে কেবল ‘পৌষ মেলায়’ রূপ নিয়েছে। মেলায় প্রতি বছর অন্যতম আকর্ষণ ঘোড় দৌড়ের পাশাপাশি গাঙ্গি খেলা ও সাইকেল রেস হলেও এবার র‌্যাফেল ড্র ও মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া গ্রামীণ বিভিন্ন খেলা ও প্রতিযোগিতা অনুুষ্ঠিত হয়।
মেলায় গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবার, মুড়কি-মুড়ি, মোওয়া, নিমকি, গজা, কলাই, বাদাম কটকটি, তিলের খাজা এবং প্লাস্টিক ও মাটির তৈরি শিশুদের বিভিন্ন খেলনা ও নারীদের বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রীর পাশাপাশি গৃহস্থালির বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসে। এ পৌষ মেলায় শেরপুর শহরসহ এর পাশেপাশের এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সের মানুষের ঢল নামে। দোকানীরা বিক্রি ভাল হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে মেলাকে ঘিরে শেরপুর শহরের নবীনগরসহ আশেপাশের এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নবীনগরের এ পৌষ মেলা কত বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে তা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে না পারলেও স্থানীয়রা জানান, প্রায় দু’শ বছর ধরে এই পৌষ মেলা এখানে হয়ে আসছে। দিনে দিনে এ মেলার আয়তন ও লোক সমাগম বাড়ছে।
মেলার বিভিন্ন প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম। ওইসময় মেলা আয়োজক কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পৌষ মেলা আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী শেরপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. নজরুল ইসলাম ও শেখ মমতাজ জানান, আমাদের বাপদাদার আমল থেকেই প্রতি বছর বাংলা পৌষ মাসের শেষদিন (পঞ্জিকা মতে) ছাওয়াল পীরের দরগাহ সংলগ্ন মাঠে এ পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ২০০ বছর যাবত এ মেলা হচ্ছে। পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য বজায় রেখে এ বছরও পৌষমেলার আয়োজন করেছি। এটি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ।