শেরপুরের গজনী সীমান্তে বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২

সবুজ আন্দোলনের উদ্বেগ প্রকাশ

হারুন অর রশিদ দুদু/রাজাদুল ইসলাম বাবু : শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী সীমান্তের আঠারোঝোড়া এলাকা থেকে একটি বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে ওই হাতির মৃতদেহটি উদ্ধার করে বনবিভাগ। এ নিয়ে গত ৪ মাসের ব্যবধানে শেরপুর সীমান্তে ৩টি বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটলো। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনবিভাগের ঝিনাইগাতীর গজনী বিট কর্মকর্তা মো. মকরুল ইসলাম আকন্দ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঝিনাইগাতী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়নাল আবেদীন, শেরপুেের সহকারী বন সংরক্ষক মো. আবু ইউসুফসহ অন্যান্যরা।

এর আগে গত ৯ নভেম্বর শ্রীবরদী সীমান্তের মালাকোচা এলাকায় এবং ১৯ নভেম্বর নালিতাবাড়ী সীমান্তের পানিহাতা এলাকার মায়াঘাঁসি গ্রাম থেকে দুটি বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিলো। এর মধ্যে মালাকুচা এলাকায় উদ্ধার হওয়া হাতির মৃত্যু বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসায় ওই ঘটনায় চারজনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে বনবিভাগ। ওই মামলায় চার আসামিই বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধারকৃত হাতিটি মাদি হাতি। হাতিটির বয়স আনুমানিক ১০/১১ বছর হবে। ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী হালচাটি গ্রাম থেকে দুই কিলোমিটার পশ্চিমে ভারত সীমান্ত সংলগ্ন আঠারোঝোড়া এলাকায় বন্যহাতির মৃতদেহটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় কৃষকরা জানালে সেটি উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, হাতিটির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাতিটির ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহটি গর্ত করে মাটিচাপা দেওয়া হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যায় যাবে।


এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন বলেন, হাতিটি সম্ভবত একদিন আগে মারা গেছে। আমরা ধারণা করছি, হাতিটি ফুড পয়জনিংয়ে মারা গেছে। কারণ হাতিটির গায়ে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন বা রক্ত নেই।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে বন্যহাতির দল ঝিনাইগাতী নাালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার লোকালয়ে নেমে আসছে। অনেকের বাড়িঘরে হানা দিয়ে গোলার ধান, চাল, বিভিন্ন গাছের ছাল খেয়ে সাবাড় করছে। স্থানীয় অধিবাসীরা বন্যহাতির কবল থেকে গোলার ধান, আবাদ-ফসল রক্ষায় চেষ্টা করছেন।
এদিকে, শেরপুরের গারো পাহাড়ে একেরপর এক হাতির মৃত্যু ও হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রকৃতি ও পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সবুজ আন্দোলন’। ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের জেলা শাখার আহবায়ক মেরাজ উদ্দিন ও সদস্য সচিব সাবিহা জামান শাপলা বলেন, সীমান্তে হাতিকে নানা উপায়ে হত্যা করা হলেও এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র একটি হাতি হত্যার ব্যাপারে মামলা হলেও বাকিগুলোর বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যে কারণে গারো পাহাড়ে হাতি হত্যা থামছেই না। তারা ওই হাতি মৃত্যুর ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে হাতি মৃত্যুর মূল কারণ উদঘাটন করার জন্য এবং এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান।