শেরপুরে শিলাবৃষ্টিতে বোরো আবাদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি

প্রকাশিত: ২:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২২

শেরপুরে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো আবাদ ও সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১৯ এপ্রিল মঙ্গলবার ভোররাতে জেলা সদরসহ ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ওই ক্ষতি হয়। এতে জেলার অন্তত: সহস্রাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি সহায়তা চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের কাজ চলছে।

জানা যায়, মঙ্গলবার ভোররাতে হঠাৎ দমকা হাওয়াসহ কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি শুরু হলে শেরপুর সদর, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার বেশ কিছু বোরো ক্ষেতের আধাপাকা ধান পড়ে যায়। ধানের গাছ নুয়ে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অন্তত: শতাধিক হেক্টর জমির ফসল। করোনার কারণে এমনিতেই গত দুই বছর ধরে নানা কারণে ধান আবাদে লোকসান লেগেই আছে। এবার ধান কাটা ও ঘরে তোলার মৌসুম মাত্র শুরু হয়েছে। এর মধ্যে শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হল তা পোষানো কঠিন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। এছাড়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় কলাবাগান, সবজি বাগানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে সদর উপজেলার মোবারকপুর, শ্রীবরদী উপজেলার পশ্চিম ঝিনিয়া ও খরিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দমকা হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষেতের ধান নুয়ে পড়ে গেছে। যে ধানগাছগুলো দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলোর শীষ ঝরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া কিছু নিচু এলাকায় বৃষ্টিতে ধান গাছ নুয়ে পড়ে তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায়।
শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজীরচর ইউনিয়নের পশ্চিম ঝিনিয়া গ্রামের কৃষক মো. খলিলুর রহমান বলেন, বোরো আবাদের ধান দিয়াই আমগর সারাবছরের খাওন চলে। আজ ভোরের বৃষ্টি আর শিলে সব ধান খেয়ে দিছে। আমরা সরকার থেকে সহযোগিতা চাই। মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি এবার এক একর বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। ধান পাকা শুরু হওয়ায় কয়েকদিনের মধ্যেই কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এর মধ্যেই আজ ভোরে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষেতের বেশিরভাগ ধানই পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন সারা বছর চলবে কিভাবে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। একই কথা জানান মো. জুলহাস আলী, মো. চাঁন মিয়া, মো. সেলিম মিয়া, মো. জয়নাল আবেদীনসহ বেশ কয়েকজন কৃষক।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোহিত কুমার দে বলেন, ভোররাতের কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে শেরপুরে বোরো আবাদের কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৫/৭৬ হেক্টর জমির ধান নষ্টের খবর পেয়েছি। কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠ পর্যায়ে ক্ষতি নিরুপণে কাজ করছে। আজকের মধ্যে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।