শেরপুরে গৃহবধূকে গাছে বেঁধে মারধর, দুই ভাইকে কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ৬:০৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩

শেরপুরে গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের এক চাঞ্চল্যকর মামলায় ২ সহোদরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে আদালত। ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে শেরপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল মাহমুদ আসামিদের উপস্থিতিতে ওই সাজা দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মো. আজাহার আলী (৫২) ও মো. কালাচানকে (৩৯) খালাস দিয়েছে আদালত।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট আরিফুর রহমান সুমন। তিনি জানান, রায়ের পরপরই দণ্ডিত ২ সহোদরকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছেন—সদর উপজেলার মধ্যবয়ড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে হানিফ মিয়া (৪২) ও মানিক মিয়া (৩৭)। তাদের মধ্যে হানিফ মিয়াকে দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১০ দিনের কারাদণ্ড এবং মানিক মিয়াকে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫শ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে অনাদায়ে আরও ৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২০১৬ সালের ২৫ মে শেষ রাতে শেরপুর সদর উপজেলার মধ্যবয়ড়া গ্রামের মৃত বাহেজ উদ্দিনের ছেলে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মো. নবীজুর রহমানের বসতবাড়িতে হামলা চালায় প্রতিবেশী মো. হানিফ মিয়া ও মো. মানিক মিয়াসহ তাদের লোকজন। আসামিদের হামলা ও ভাঙচুরের শব্দে নবীজুর রহমানের স্ত্রী গৃহবধূ মোছা. মনিকা বেগম (৪৫) ঘুম থেকে উঠে বাইরে গিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা ওই গৃহবধূকে পাশে থাকা শিমুল গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। তাদের মারধরে গৃহবধূর ডান হাতের একটি আঙুল ভেঙে যায়। ওই অবস্থায় নবীজুর রহমান ও তার ছেলে মো. মনিরুজ্জামান এগিয়ে গেলে আসামিরা তাদেরকেও মারধর করে এবং নগদ টাকা চুরিসহ ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও গাছপালা কেটে ক্ষতিসাধন করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ওইসময় ঘটনাটি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে ওই ঘটনায় নবীজুর রহমান বাদী হয়ে মো. হানিফ মিয়াসহ ৪ জনকে স্বনামে ও অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামি করে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই মো. আনসার আলী একই বছরের ৩০ জুন হানিফ মিয়া ও মানিক মিয়াসহ ৪ জনের নামে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। মামলার দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় বাদী-জখমিসহ ৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।