ক্ষমতাচ্যুতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করলেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১২, ২০২৪

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে কোনো বিদেশি শক্তির দ্বারা ব্যবহৃত না হতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক করেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট গতকাল রোববার এক প্রতিবেদনে জানায়, দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গত শনিবার দেওয়া এক বার্তায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের টানাপোড়েন চলছিল অনেকদিন ধরেই। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি বলেছিলেন, বিমানঘাঁটি করতে দেওয়ার বিনিময়ে তাকে সহজে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রলোভন দিয়েছিলেন এক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি।
বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, আমি যদি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সেন্টমার্টিন ও বঙ্গোপসাগর ছেড়ে দিতাম, তাহলে আমি ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। তিনি বলেন, লাশের মিছিল যাতে দেখতে না হয়, সেজন্য আমি পদত্যাগ করেছি। তারা আপনাদের (ছাত্রছাত্রীদের) লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। আমি তা হতে দিইনি। আমি দেশে থাকলে হয়তো আরও প্রাণহানি হতো। আরও অনেক সম্পদহানি হতো। দেশে ফিরে আসার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি শিগগির ফিরব, ইনশাআল্লাহ। পরাজয় আমার, কিন্তু জয়ী হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। আপনাদের সমর্থন নিয়ে আমি এসেছিলাম, আপনারা ছিলেন আমার শক্তি। আপনারা যখন আমাকে চাননি, তখন আমি নিজে থেকে সরে গেছি, পদত্যাগ করেছি। আমার যেসব কর্মী সেখানে আছেন, তারা কেউ মনোবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বারবারই উঠে দাঁড়িয়েছে।
দেশত্যাগ করার আগে যে বক্তব্য তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে দিতে চেয়েছিলেন, তাতেও এর উল্লেখ ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, আমেরিকার কথামতো বঙ্গোপসাগরে একক আধিপত্যের জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ তাদের ছেড়ে না দেওয়ার মাশুল হিসেবে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশিদের সতর্ক করেছেন, তাদের ওপর মৌলবাদীরা যেন ভর না করে।
শেখ হাসিনা আশাপ্রকাশ করেছেন, তিনি আবার নিজের দেশে ফিরে যাবেন। তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আবারও দাঁড়াবে। তার দলের বহু নেতাকে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার খবরে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগের শীর্ষ কর্তাদের বক্তব্য, গত মে মাসে আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাস্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফরের সঙ্গে এই ক্ষমতা পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে। এই অভিযোগও তারা করছেন যে, লু চীনবিরোধী কিছু পদক্ষেপ নিতে হাসিনার ওপর চাপ দিচ্ছিলেন।