নতুন দিকনির্দেশনায় ১৪ দল এগিয়ে নিতে চান আমু

প্রকাশিত: ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১২, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : করোনা-পরবতী সময়ে ১৪ দলের ঐক্যবদ্ধ পথপরিক্রমাকে নতুন দিকনির্দেশনায় এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন জোট সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু। সেই সঙ্গে তিনি এই জোটের নেতাকর্মীদের নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ডসহ সব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৪ দলের শরিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর গত ৮ জুলাই আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, অভিজ্ঞ রাজনীতিক আমির হোসেন আমুকে ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নতুন সমন্বয়ক ও মুখপাত্রের দায়িত্ব দেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ১৫ জুলাই তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২৩ দফার ভিত্তিতে বাম প্রগতিশীল জোট ১১ দল, আওয়ামী লীগ, জাসদ ও ন্যাপ মিলে ১৪ দলীয় জোটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এর আগেও রাজপথে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে সক্রিয় ছিল জোটভুক্ত এসব দল। শুরুতে এই জোটের সমন্বয়ক ছিলেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় এলে ১৪ দলের সমন্বয়কের দায়িত্ব পান আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। পরে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে মুখপাত্রের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। তার মুত্যুর পর সম্প্রতি আমির হোসেন আমু এ দায়িত্ব পেয়েছেন।

বর্ষীয়ান রাজনীতিক আমির হোসেন আমু এমপি বলেছেন, যে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের অবস্থান খুবই কঠোর। সেই ক্ষেত্রে ১৪ দলের জোট আগামী দিনেও অতন্দ্র প্রহরীর মতো ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার পাশে থাকবে।

সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর দৃষ্টিতে, অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় নেই। যতই ক্ষমতাধর হোক, তাকে আইনের আওতায় আসতেই হবে। তবে শুধু তাদের শাস্তি দিলেই হবে না, তাদের মতো রাজনৈতিক উচ্ছিষ্টভোগীদের যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে, তাদেরও খুঁজে বের করতে হবে।

তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা বাড়ছে। এ অবস্থাকে আরও মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক অপশক্তিকে রাজনীতির মাঠ থেকে তাড়াতে হবে। শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত এবং তাদের মদদদাতাদের খুঁজে বের করে দল থেকে বের করে দিতে হবে।

আমির হোসেন আমু বলেন, রাজনীতির পাশাপাশি প্রশাসনেও প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তি, স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকারের সন্তান, তাদের আত্মীয়স্বজনের পদোন্নতি এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। এটি অশনিসংকেত। কেননা এই অপশক্তি সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র নিয়ে এগোচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

করোনা সংকটের পাশাপাশি বন্যাদুর্গত অসহায় মানুষের সুরক্ষার বিষয়টিকে সরকারের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে মানবিকতার আধার ও আস্থার ঠিকানা শেখ হাসিনা সবসময় অসহায় মানুষের পাশে আছেন। আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে সংকটের সাহসী ও মানবিক নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।

তিনি বলেন, হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষার ভুয়া সনদ, প্লাজমা ডোনেশন, সুরক্ষা সামগ্রী কেনা, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি সংগ্রহসহ স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে। যারা জনগণের অসহায়ত্ব নিয়ে অবৈধ ব্যবসা, ছিনিমিনি ও প্রতারণা করছে, তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল থাকতে হবে।

তিনি বলেছেন, করোনা সংকট মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে দিকনির্দেশনা রয়েছে, তা বাস্তবায়ন করাই এ মুহূর্তে ১৪ দলের সবচেয়ে বড় কাজ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য জনগণকে সচেতন করা গেলে এবং বোঝানো গেলে করোনার বিস্তার রোধ সম্ভব হবে।

আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ হাসিনার হাত ধরেই ১৫ দল সৃষ্টি হয়েছিল। এখন যে ১৪ দল আছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই তার প্রধান। কঠিন দিনগুলোতে তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, খালেদাবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন। নতুন করে তাকে দায়িত্ব দেওয়ায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অতীতে যেভাবে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, কর্মসূচি ও আন্দোলন-সংগ্রামের ডাক বাস্তবায়নে কাজ করেছি, ভবিষ্যতেও এর ব্যতিক্রম হবে না।’