ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতে রাজি হননি কিয়ার স্টারমার

প্রকাশিত: ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে।

ড. ইউনূস ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের প্রচেষ্টার সমর্থন পেতে লন্ডন সফর করছেন। ইউনূস ব্রিটিশ এ দৈনিককে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের চুরি করা তহবিল খুঁজে বের করতে তার সরকারকে সাহায্য করার জন্য যুক্তরাজ্যের নৈতিকভাবে বাধ্যবাধকতা বোধ করা উচিত। চুরি হওয়া ওই অর্থের একটি বড় অংশ বর্তমানে যুক্তরাজ্যে আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্টারমার এখনও তার সঙ্গে দেখা করতে রাজি হননি জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, তার সঙ্গে আমার সরাসরি কোনো কথা হয়নি। তিনি আরও বলেন, স্টারমার বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবেন। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্ট অনুসারে, ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করার কোনো পরিকল্পনা স্টারমারের নেই এবং তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের সরকারি কর্মকর্তারা তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
ড. ইউনূসের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই অর্থ খুঁজে পেতে সহায়তা করছে।
যার প্রমাণ মিলে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে। যাতে বলা হয়, বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী এবং শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যভিত্তিক কয়েকটি সম্পদ জব্দ করেছে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।
স্থানীয় সময় বুধবার (১১ জুন) রাতে আই-ইউনিটকে দেওয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের এনসিএ জানায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন একাধিক সম্পদের বিরুদ্ধে তারা ‘ফ্রিজিং অর্ডার’ পেয়েছে, যা এখনো চলমান একটি বেসামরিক তদন্তের অংশ। এই ফ্রিজিং অর্ডারের ফলে সেসব সম্পদ তিনি আর বিক্রি করতে পারবেন না।
সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে বর্তমানে বাংলাদেশে মানি লন্ডারিং বা অর্থপাচারের অভিযোগে তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইনগত অনুরোধের পরই এনসিএ এই পদক্ষেপ নেয়।
এদিকে স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। মঙ্গলবার (১০ জুন) লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বর্তমানে কানাডায় রয়েছেন। আজ এক ব্রিটিশ এমপি আমাদের এ তথ্য দিয়েছেন।’ তিনি আরও জানান, দুপক্ষের মধ্যে বৈঠকের জন্য সময়সূচি সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে।
এর আগে গত ৪ জুন পররাষ্ট্র বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী জানান, লন্ডন সফরে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন এবং কিং চার্লস তৃতীয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ করবেন।
স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক নিশ্চিত না হলেও বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সেন্ট জেমস প্যালেসে কিং চার্লস তৃতীয় আনুষ্ঠানিকভাবে অধ্যাপক ইউনূসকে ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান করবেন। শান্তি, টেকসই উন্নয়ন ও সামাজিক সমন্বয়ের জন্য তার আজীবন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এটি দেওয়া হচ্ছে।