নালিতাবাড়ীতে ভোগাই নদীর বালু মহাল ইজারা নিয়ে সংবাদ সন্মেলন

প্রকাশিত: ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২০

মাহফুজুর রহমান সোহাগ ॥ শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর হাতিপাগাড়, নাকগাঁও ও কালাকুমা মৌজায় উত্তোলনকৃত মজুদ বালু স্থিত অবস্থায় রাখার দাবীতে ২২ জুলাই বুধবার দুপুরে নাকুগাঁও স্থলবন্দর চারআলী বাজারে এক সংবাদ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী রহুল আমীনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আল আমিন ট্রেডার্সের পক্ষে লিখিত বক্তব্য রাখেন বালু ব্যবসায়ী নেতা মোঃ জাকারিয়া এ সময় আল আমিন ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী শহিদুল ইসলাম, ৩২৭৭ নালিতাবাড়ী উপকমিটির সভাপতি হারুনুর রশিদ ও সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম ও আমজাদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে (১৪২৬ সনের) ইজারাদার শহিদুল ইসলাম বলেন, বিগত ১৪২৬ বাংলা সনের ভোগাই নদীর বালু মহালের অর্ন্তগত নাকগাঁও, কালাকুমা ও হাতিপাগাড় মৌজাসহ মোট ৯টি মৌজার ২৬.৯০ একর বালু মহাল ১ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে পরিচালনা করে আসছিলাম। এরপর ২০১৯ইং সালের ১৪ এপ্রিল বালু মহাল বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও সীমানা সংক্রান্ত ও মৌজা জলিতার কারনে ৫ মাস পর ২০১৯ সালের ২৬ আগষ্ট বালু মহাল বুঝিয়ে দেয়। যার ফলে আমি ব্যাপক ক্ষতি গ্রস্থ হই। ইজারা পাওয়ার পর ৯টি মৌজার মধ্যে হাতিপাগাড়, কালাকুমা, ও নাকুগাঁও মৌজার ৩টি জায়গার রাস্তাসহ দুর্গম ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। পরে এগুলি সংস্কার করে উত্তোলন শুরু করি। এদিকে সওজ কর্তৃক ব্রীজ উন্নয়ন ও সড়ক উন্নয়নের কারনে উত্তোলনকৃত বালু পরিবহন ও বিপনন বন্ধ থাকে। এতে করে আমার ইজারার সময় ৩০ লক্ষ ঘনফুট বালু মজুদ হয়ে যায়। একই সাথে সারাদেশে করুনা ভাইরাসের কারনে লকডউন ও ছুিটর জনিত কারনে সব দরনের যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আমার মজুদকৃত বালু পরিবহন ও বিপনন বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে ২০২০ সালের ১২ মে জেলা প্রশাসক শেরপুরকে আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি অবগত করি। পরে আমি আমি হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করি। হাইকোর্ট ২০২০ সালের ৬ জুলাই এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসক শেরপুরকে বিষয়টির নিস্পত্তির নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক বিষটির ব্যাপারে ১৬ জুলাই্ অবগত করেন।
এর পরের বছর ১৪২৭ সনের ভোগাই নদীর বালু মহালের অর্ন্তগত ফুলপুর, আন্ধারুপাড়া, কেরেঙ্গাপাড়া ও মন্ডলিয়াপাড়া এই ৪টি ১২.৩২ একর জায়গার ইজারা পায় মের্সাস ইলিয়াছ এন্টারপ্রাইজ। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী তারা এই ৪টি জায়গা থেকে বালু উত্তোলন ও বিপনন করার কথা থাকলেও তা না করে তারা জেলা প্রশাসনের নিষিদ্ধকৃত জায়গা নাকুগাঁও, হাতিপাগাড় ও কালাকুমা হতে বালু উত্তোলন শুরু করে। যা তারা করছে সর্ম্পূন অ্াইন বর্হিভত। এদিকে ইরিয়াছ এন্টারপ্রাইজ চলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে ২০২০ সালের ১৪ জুলাই ইং তারিখের রিট পিটিশন আদেশের বিপরীতে মহামান্য হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালতে আপিল দায়ের করে। পরে চেম্বার জজ আদালত আদেশ স্থগিতাদেশ দেয়। কিন্তু ২০২০ সালের ১৪ জুলাই স্থগিত পাওয়ার পরেও ইলিয়াছ এন্টারপ্রাইজ অবৈধভাবে আমার উত্তোলনকৃত বালু বিক্রি করে টোল আদায় করে যাচ্ছে। এতে আমার ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
আমার দাবী মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। হাইকোর্টর নিয়মিত আদালতে পুর্নাঙ্গ বেঞ্চে শুনানীর আগ পর্যন্ত আমার মজুদকৃত বালু যেন কোন অবৈধ ইজারাদার বালু বিক্রি করতে ও টোল আদায় করে অর্থ অর্থআত্নসাৎ করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে আমু পদক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান গত ২১ জুলাই সন্ধায় নাকুগাঁও স্থল বন্দরে গিয়ে মের্সাস আল আমিন ট্রের্ডাস মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটিশন মোকদ্দমা আনয়ন করেছেন এবং পরে ইলিয়াছ এন্টারপ্রাইজ উক্ত মামলার আদেশের বিরোদ্ধে মহামান্য হাইকোর্ট এ আপিল মোকদ্দমা আদেশ বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করেন এবং উভয় পক্ষকে টোল আদায় সংক্রান্ত বিধি নিষেধ করেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াস এন্টারপ্রাইজের পক্ষে মনিরুজ্জামান সোহাগ জানান, আমাদের ৪টি বালু মহালের মধ্যে ৩টিই নদীর ওপারে (পূর্বপাড়ে)। ফলে ওইসব বালু মহালের বালু চারআলী ব্রিজ দিয়ে পরিবহণ করতে হয়। এরজন্য আমরা ওই এলাকায় অফিস নিয়ে রয়েলিটি আদায় করে থাকি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও জানান, বালু মহাল ইজারা আইনে সরকারী খাস কালেকশনের সুযোগ নেই। বালু মহল ইজারার বৈধ স্থানের প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়টি জেলা প্রশাসকের এখতিয়ার।