খুনি রাশেদ চৌধুরীর আশ্রয় পর্যালোচনার নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২০ অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি রাশেদ চৌধুরীর আশ্রয় মঞ্জুরের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার ঘোষণ দিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ। প্রায় ১৫ বছর আগে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা রাশেদের আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার মার্কিন সাময়িকী পলিটিকো জানিয়েছে, ওই সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার জন্য নিজের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার। এই প্রক্রিয়ার শুরুর মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের সুযোগ হারাতে পারে বঙ্গবন্ধুর এই খুনি। আর তা হলে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে। বাংলাদেশ সরকার অনেক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। সর্বশেষ গত এপ্রিলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের কাছে এই অনুরোধ জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। রাশেদ চৌধুরীর আশ্রয় পর্যালোচনার জন্য পাঠাতে গত ১৭ জুন যুক্তরাষ্ট্রের বোর্ড অব ইমিগ্রেশন আপিলস (বিআইএ)-কে চিঠি দেন অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘আবেদনকারী যে একটি মারাত্মক অরাজনৈতিক অপরাধে জড়িত ছিল তা বিবেচনার সম্ভাব্য কোনও কারণ নেই এমনটা নির্ধারণে বোর্ড কি ভুল করেছিল?’ মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল লিখেছেন, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বোর্ড কি যথাযথভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল, যে অপরাধের জন্য তার অনুপস্থিতিতে আবেদনকারী দণ্ডিত হয়েছে সেই ‘অপরাধ উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না’ কিংবা ‘চরিত্রগতভাবে নৃশংস বা বর্বর ছিল না’?” মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বারের এই পর্যালোচনা প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাশেদ চৌধুরীর আইনজীবী। ওই আইনজীবী বলেন, ২০০৫ সালে আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুরের সময় যদি বিল বার তার অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে না থাকেন তাহলে এই মামলা তার পুনরায় শুরু করার কোনও কারণ থাকতে পারে না। রাশেদ চৌধুরীর আইনজীবী মার্ক ভ্যান ডার হাউট পলিটিকোকে বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে বিল বার ইতোমধ্যে তার (রাশেদ চৌধুরীর) আশ্রয় মঞ্জুর করা অভিবাসন আদালতের রায় পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। বার যদি রাশেদ চৌধুরীর পক্ষে বিচারকদের অনুসন্ধানের সঙ্গে অসম্মত না হয়ে থাকেন তাহলে এই মামলা পুনরায় শুরুর কোনও কারণ নেই।’ রাশেদ চৌধুরী ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। এর কিছু দিনের মধ্যে সে দেশটিতে আশ্রয়ের আবেদন করে। প্রায় দশ বছর পর একজন অভিবাসন বিচারক তার আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর করেন। বিচারকের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)। যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের অবস্থানের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের যেকোনও যুক্তি দেখভাল করে এই বিভাগ। রাশেদ চৌধুরীর রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সময় ডিএইচএস’র আইনজীবীদের যুক্তি ছিল, সেনা অভ্যুত্থানে জড়িত থাকায় এই আবেদনকারী আশ্রয় পাওয়ার অযোগ্য। পরে এই মামলাটি চলে যায় মার্কিন বিচার বিভাগের বোর্ড অব ইমিগ্রেশন আপিলসের কাছে। মার্কিন এই বোর্ডটি অভিবাসন বিচারকদের তদারকি করে থাকে। তাদের সিদ্ধান্ত বদলানোর ক্ষমতাও রয়েছে এই বোর্ডের। ২০০৬ সালে এই বোর্ড বিচারকদের পক্ষ নিয়ে সিদ্ধান্ত দেয় যে রাশেদ চৌধুরী আশ্রয় পাওয়ার যোগ্য। রাশেদ চৌধুরীকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বোর্ড অব ইমিগ্রেশন আপিলসের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার প্রক্রিয়া শুরু করে অ্যাটর্নি জেনারেল আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। Related posts:সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করল বিএসএফগণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো চাপ নেই : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টাযুক্তরাষ্ট্র আরও স্যাংশন দিতে পারে, এটা তাদের ইচ্ছা: প্রধানমন্ত্রী Post Views: ২৪৮ SHARES জাতীয় বিষয়: