নকলায় সুদের টাকা না পেয়ে কলেজশিক্ষকের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট : আটক ৭ অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৬:৫১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০২০ নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ শেরপুর জেলার সর্বত্রই দাদন ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। দাদন ব্যবসায়ীদের ফাদেঁ পড়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। দাদন ব্যবসায়ীরা সুদের টাকা লগ্নি করার সময় সাদা চেকে স্বাক্ষর নিয়ে রাখে। পরে তাদের চাহিদা মতো টাকা না পেলে তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী টাকার অংক বসিয়ে আদালতে মামলা ঠুকে দেয় বা দেয়ার হুমকি দেয়। শেরপুরের নকলা উপজেলার হালগড়া গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে দাদন ব্যবসায়ী সুজনের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন নকলার চন্দ্রকোনা কলেজের আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মাহদী মাসুদ লিটন। মাত্র ৫০ হাজার টাকা নিয়ে সুদে-আসলে এখন ৫ লাখ টাকা দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে তাকে মাসে ৫০ হাজার টাকা সুদই দিতে হয়। তাই তার বাবার দেয়া সম্পত্তিও বিক্রি করে দেনা শোধ করতে পারেননি। অতিরিক্ত সুদের টাকা না পেয়ে সুজন ৫ অক্টোবর সোমবার বিকেলে তার ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে শিক্ষক লিটনের চন্দ্রকোনা রানীগঞ্জ গ্রামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। ভাঙচুর করা হয় আসবাবপত্রও। লুট করে নেয় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ অন্তত: ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল। ঘন্টাব্যাপী তান্ডব চালিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয় লিটনের আধাপাকা বাড়ি। ওইসময় দাদন ব্যবসায়ী সুজনের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। পরে লিটন সহযোগিতা চেয়ে ৯৯৯-এ ফোন করলে নকলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং ৭ জনকে গ্রেফতার করে। তবে মূল হোতা দাদন ব্যবসায়ী সুজন পালিয়ে যায়। শিক্ষক মাহদী মাসুদ লিটন জানান, আমি দাদন ব্যবসায়ী সুজনের পাল্লায় পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। এখন আমার কিছুই নাই। আমার সাদা চেক নিয়ে চাকুরীর ভয় দেখিয়ে আমার সব কিছু হাতিয়ে নিয়েছে। শিক্ষক মাহদী মাসুদ লিটনের মা জবেদা বেগম জানান, এতগুলো মানুষ আইসা আমাগো বাড়ি ভাঙচুর-লুট করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। আমার ছেলে লিটনকে পেলে তারা মেরে ফেলতো। দাদন ব্যবসায়ীর এমন তান্ডবের তীব্র নিন্দা ও এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসীদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, সুলতান মিয়া ও করোনা বেগম জানান, আমরা সুদখোরদের বিচার চাই। এরা মানুসেরে ধ্বংস করে ফেলছে। এদিকে একজন শিক্ষকের কাছ থেকে সাদা চেক নিয়ে তার ওপর নির্যাতন ও তান্ডবের প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষকগণ। তারা ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। নকলার চন্দ্রকোনা কলেজের অধ্যক্ষ ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম, জানান শিক্ষক দিবসে একজন শিক্ষকের ওপর এমন জুলুম অত্যাচার মেনে নেয়া যায় না। আমি দ্রুত তদন্তসাপেক্ষে এই হামলার বিচার চাই। শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আমিনুল ইসলাম জানান, ওই ঘটনায় নকলা থানায় ২০ জনকে স্ব-নামেসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। ওই ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি, অবৈধ দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক। Related posts:ঝিনাইগাতীতে আবু রায়হান ও তার পরিবারের উপর হুমকীর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনশ্রীবরদীতে ছুরিকাঘাতে কৃষক নিহত, ঘাতক গ্রেফতারনালিতাবাড়ীতে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণির ৮১তম জন্মদিন পালিত Post Views: ২৫৬ SHARES শেরপুর বিষয়: