শ্রমিকের বদলে ড্রেজার

প্রকাশিত: ৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২১

জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পে শ্রমিকের বদলে শুরুতেই উন্নয়মূলক প্রকল্পে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। শ্রমিকের কাজ ড্রেজারে করে পকেট ভারি হচ্ছে কর্তাসহ সংশিষ্টদের। আর এবিষয়ে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ড্রেজারের পরিবর্তে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর লিখিত আবেদন জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যানের দাবি উপরের মহল থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিটা কর্মসূচীর ২য় পর্যায়ের উপজেলার চরপুটিমারী ইউনিয়নের চতলাপাড়া শুকুর মেম্বারের বাড়ি থেকে জুনাব ব্যাপারীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রকল্পের নামে শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার নিয়ম থাকলেও কাজের সঙ্গে সংশিষ্টরা সরকারি নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করেই অধিক লাভের আশায় দশআনী নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে রাস্তা সংস্কার কাজ চালানো হচ্ছে। এর ফলে একদিকে নিজের পকেট ভারি করছে অপরদিকে দূর্ভোগ ও ক্ষতির মুখে পড়ছেন স্থানীয় কৃষকসহ শ্রমিক ও এলাবাসীরা।
মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দশআনী নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে ওই প্রকল্পে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এর ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছে ওই এলাকার হতদরিদ্র শ্রমিকেরা। অপরদিকে ফসলি জমিসহ নদী দুই পাড় নদী গর্ভে দেবে যাওয়ার চরম আশংকা রয়েছে।
ওই এলাকার হতদরিদ্র কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, ‘করোনা ও বন্যার কারণে বেকার হয়ে পড়েছি। আশায় বুক বেঁধে ছিলাম সরাকারের উন্নয়ন মূলক কাজ শুরু হলে কাজ পাবো। আমাদের পেটে লাথি মেরে ড্রেজার মেশিন দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। তাই গত বৃহস্পতিবার ইউএনও স্যারকে লিখিত আবেদন দিয়েও কোন কাজ হয়নি’।
স্থানীয় একাধিক শ্রমিকরা জানান, ‘ আমরা গরিব খেটে খাওয়া মানুষ, আমাদের কাজ দরকার। আমাদের কাজ না দিয়ে মেম্বার চেয়ারম্যানরা ড্রেজার মেশিন মাটি কাটার কাজ করছে। এটাকি সরকারের নিয়ম?
কৃষক লাল মিয়া জানান, ‘আমরা গরিব গারব মানুষ, আমাদের কথা শুনবে কে? আমার পাশের জমি (দশ আনী নদী) থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে। আমার হাই হুতাশ ছাড়া আর কিছুই করার নেই।
চরপুটিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সুরুজ্জামান মাস্টার জানান, ‘ সেখানে মাটি কাটার ব্যবস্থা না থাকায়,উপরের মহল থেকে পারমিশন নেয়া আছে।
পারমিশনের কপি দেখতে চাইলে তিনি জানান, মৌখিক ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার অনুমতি নিয়েই কাজ করা হচ্ছে’।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেদী হাসান টিটু জানান, ‘ওই প্রকল্পের কমিটি এখন পর্যন্তই পাইনি, তারা কি ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে কাজ করে। আমি তাদেরকে বার বার বলেছি তারা যেন শ্রমিক দিয়ে কাজ করে। তার পরেও তারা যদি শ্রমিক ছাড়া ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটে তাহলে তাদের বিল দেয়া হবে না’।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) সাথে যোগাযোগ করেন’। তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে কথা বলে সুরাহা করতে পারবেন।