কার্যালয় ছেড়েছেন কাদের মির্জা, বসুরহাট থমথমে

প্রকাশিত: ৪:৩৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক : রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে সংঘর্ষ থেকে রক্তপাত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থানে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জনমনে রয়েছে আতঙ্ক।
গত কয়েকদিন ধরেই এমন অবস্থা দেখা যাচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার রাতে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে গ্রেপ্তারের গুজব ছড়িয়ে পড়লে এই থমথমে অবস্থা আরও বেড়ে যায়।
সারারাত পৌর কার্যালয়ে অবস্থান করার শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বাইরে বেরিয়ে আসেন কাদের মির্জা। এরপর বাজার ও বিভিন্ন ইউনিয়নে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে যান তিনি।
বুধবার রাতে কাদের মির্জা যখন কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন তখন ওই কার্যালয় ঘিরে অবস্থান নেয় পুলিশ, শুক্রবারও কার্যালয়ের আশপাশে পুলিশ দেখা গেছে। তবে রাতে অবস্থান নেওয়া র‌্যাব সদস্যদের সকালের আর সেখানে দেখা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, দুইটি হত্যাকাণ্ড এবং বারবার সংঘর্ষের পর বসুরহাটে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক রয়েছে। থমথমে হয়ে আছে পুরো এলাকা। গত কয়েকদিনের মতো শুক্রবারও এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে। তবে এদিন কিছু দোকানপাট খুলেছে, যানবাহনও কিছুটা চলতে শুরু করেছে। মানুষ ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসলেও আতঙ্ক কাটেনি।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সতর্ক আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলয়া তারা সতর্ক আছেন।
আবদুল কাদের মির্জার ‘সত্য বচন’ শুরু হয় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে একের পর এক তার বিস্ফোরক বক্তব্যে দলে দেখা দেয় অস্বস্তি। এক পর্যায়ে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল মাঠে নামেন। তার নেতৃত্বে চাপরাশিরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের হলে সেখানে কাদের মির্জার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। এতে গুলিতে প্রাণ হারান সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মোজাক্কির।
সেই রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার দু’গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ, বোমা হামলা ও গোলাগুলিতে প্রাণ হারান চরফকিরা ইউনিয়নের চরকালী গ্রামের শ্রমজীবী আলাউদ্দিন।
কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর কঠোর অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বৃহস্পতিবার অপরাধীদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলেছে। এর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিকেল ৪টার দিকে নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এরপরই কাদের মির্জাকে যেকোনও সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কাদের মির্জার স্ত্রী আক্তার জাহান বকুল স্বামীর কিছু জামা-কাপড়সহ একটি ব্যাগ নিয়ে পৌর কার্যালয়ে যান। সন্ধ্যার পর একজন আইনজীবীও কাদের মির্জার সঙ্গে দেখা করে পৌর ভবন থেকে বের হন। এ নিয়ে কাদের মির্জার অনুসারী নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক জেঁকে বসে।