নগরবাসীকে যানজটমুক্ত রাখতেই পাতাল রেলের পরিকল্পনা: কাদের

প্রকাশিত: ৪:০৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক : নগরবাসীর অসহনীয় দুর্ভোগ এবং যানজট ও জনজটমুক্ত রাখতেই সরকার পাতাল রেল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকা শহরে পাতাল রেল নির্মাণের লক্ষ্যে স্পেনের টিপসার নেতৃত্বে যৌথভাবে জাপানের পেডিকো, বিসিএল অ্যাসোসিয়েটস, কেএসসি এবং বেটসকে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

২৪ মার্চ বুধবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ঢাকা শহরে পাতাল রেল (সাবওয়ে) নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি নিজের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন সেমিনার অনুষ্ঠানে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ঢাকা পাতাল রেল নেটওয়ার্কের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১টি রুটের অ্যালাইনমেন্ট প্রস্তাব করে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এরমধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চারটি রুট প্রাথমিক ডিজাইন কাজের অন্তর্ভুক্ত।

রুট চারটি হলো ঝিলমিল থেকে টঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার, শাহকবির মাজার রোড থেকে সদরঘাট পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার, কেরানীগঞ্জ থেকে সোনাপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৪৮ কিলোমিটার সড়ক। সেতুমন্ত্রী আশা করেন, প্রকল্পটি নির্মাণের ফলে ঢাকা শহরের প্রায় ৮০ লাখ কর্মজীবী মানুষের মধ্যে ৪০ লাখ মাটির নিচ দিয়ে চলাচল করবেন। এবং এর মাধ্যমে মাটির উপরিভাগ যানজট ও জনজটমুক্ত হবে।

দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুতে রেলওয়ে এবং সড়কপথের স্ল্যাব বসানোর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বলেও জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মূল সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি শতকরা ৯২.৫০ ভাগ। নদীশাসন কাজ শতকরা ৮০ ভাগ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮৪.৫০ ভাগ। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শেষে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে বলে আশা করেন মন্ত্রী।

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে ইতোমধ্যেই প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি টিউবের রিং প্রতিস্থাপনসহ বোরিং কাজ শেষ হয়েছে এবং এরইমধ্যে টিউবটির ২০০ মিটার রোড স্ল্যাব নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। পাশাপাশি দ্বিতীয় টিউবটির ৭০০ মিটার বোরিং কাজও সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, টানেলের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি এ পর্যন্ত শতকরা ৬৫ ভাগ।

ঢাকা শহরে পাতাল রেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শীর্ষক সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন সেতু সচিব মো. বেলায়েত হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ দেশের সাধারণ মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমেই উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ। দেশের উন্নয়ন-অর্জন যেমন বিএনপি দেখতে পায় না, তেমনি জনগণ তাদের নেতিবাচক রাজনীতি দেখতে পায় না। বিএনপিকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সাম্প্রতিক পৌরসভা নির্বাচন এবং বিভিন্ন উপ-নির্বাচনে তাই প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গের দর্শনে বিশ্বাসী বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি করেছে শেখ হাসিনা সরকার। অপরদিকে বিএনপি তৈরি করেছিল অবিশ্বাসের কৃত্রিম দেয়াল।

যারা গঙ্গার পানিবণ্টনের বিষয়টি ভারত সফরকালে বেমালুম ভুলে যায়, তারা আজ তিস্তার পানি বণ্টনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই সরকারের সমালোচনার কৌশল এখন তাদের ভোঁতা অস্ত্র হয়ে গেছে।