সোহাগপুর বিধবাপল্লীতে স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব

প্রকাশিত: ৮:৩৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২১

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি : শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সেই সোহাগপুর বিধবাপল্লীতে এবার শহীদ স্মৃতিসৌধ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। ১৫ জুন মঙ্গলবার দুপুরে ওই স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শেরপুরের বিদায়ী জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব। ওইসময় তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জেলা প্রশাসন থেকে আমরা উপলব্ধি করেছি, দেশের স্বাধীনতা অর্জনে যারা আত্মত্যাগ করেছিলেন তাঁদের অনেকেরই স্মৃতি এবং অনেক গণহত্যার চিহ্ন আমাদের সংরক্ষণ করা নেই। তাই গণহত্যার জায়গাগুলো চিহ্নিত করার প্রচেষ্টায় ‘সোহাগপুর শহীদ স্মৃতিসৌধ’র ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হলো। তিনি আরও বলেন, ২ বছরের প্রচেষ্টায় ৩ শতাংশ জমির উপর ওই স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হচ্ছে। স্মৃতিসৌধে যাতায়াতের রাস্তার জন্য স্থানীয় দুই ব্যক্তি ১ শতাংশ জায়গা দেওয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।


ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২৪ জন বিধবাকে শাড়ি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও নগদ অর্থ প্রদান করেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব। এছাড়াও শহীদ পরিবারের সন্তান ও এলাকাবাসীদের মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শেরপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) এটিএম জিয়াউল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুকতাদিরুল আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফরিদা ইয়াছমিন, নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা হেলেনা পারভীন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্চিতা বিশ্বাস, কাকরকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ তালুকদার মুকুল, বিধবাপল্লী শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতির সভাপতি জালাল উদ্দিন প্রমুখ ।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই উপজেলার পাক হানাদার বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসরদের সহায়তায় সীমন্তবর্তী সোহাগপুর গ্রামে তাণ্ডব চালিয়ে ১৮৭ জন পুরুষকে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। ওইসময় ৬২ নারী বিধবা হন এবং তাদের মধ্যে ১৪ জন নারী পাশবিক নির্যাতনেরও শিকার হন। এরপর থেকেই সোহাগপুর গ্রামটি বিধবাপল্লী নামে পরিচিতি লাভ করে।