রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ৭:০২ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২১ শ্যামলীনিউজ ডেস্ক : কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘চার বছরের বেশি সময় ধরে জোরপূর্বক বিতাড়িত ১ দশমিক ১ মিলিয়নের বেশি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়ে আসছি আমরা। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু দীর্ঘসময় ধরে এখানে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের আশ্রয়স্থল হতে পারে না। বিশ্ব সম্প্রদায়কে অনুরোধ করবো, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের তাদের মাতৃভূমিতে সম্মানজনক ও শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতে আমাদের সহায়তা করুন।’ বুধবার (২৩ জুন) তিন দিনব্যাপী নবম মস্কো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটি দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যকার সংঘাত আন্তঃদেশীয় নিরাপত্তা সমস্যার জন্ম দেয়। এখন নিরাপত্তা ধারণার মধ্যে সামরিক হুমকি, ব্যক্তির আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রয়োজন, স্বেচ্ছায় গণঅভিবাসন, পরিবেশগত নিরাপত্তা এবং অন্যান্য অপ্রচলিত নিরাপত্তা হুমকি অন্তর্ভুক্ত।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমনকি সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা, বিছিন্নতাবাদ, ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র, সাইবার অপরাধ, আঞ্চলিক কোন্দল এবং পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা দেখা দিয়েছে।’ এক্ষেত্রে সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করার কথা দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য অংশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করবে।’ কোভিড-১৯ মহামারি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমান সময়ে এটি বিশ্বের অন্যতম বড় সমস্যা। এটি শুধু লাখ লাখ জীবনই নেয়নি, অর্থনীতিকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে এবং সারাবিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবিকাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’ এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবার জনস্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত এবং বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এ মহামারিবিরোধী লড়াইয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা দেখিয়েছে।’ যে কোনো মূল্যে দেশের সব নাগরিককে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টিকাদানের আওতায় আনার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য সব উৎস থেকে সরকার টিকা সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকার টিকার জন্য রাশিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংযুক্ত আছে। বাংলাদেশের টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে এমনকি আমাদের যদি টিকা উৎপাদন চেইনে নেয়া হয়, আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়কে সহায়তা দিতে পারবো।’ বিশ্ব সম্প্রদায়কে কোভিড-১৯ যুদ্ধে সবার জন্য টিকা নিশ্চিত, অসহায় মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা, রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবর্তন, সন্ত্রাসীদের অস্ত্র ও অর্থসহায়তা বন্ধ করা এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সামরিক সংস্থারগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জলবায়ু সমস্যাকে বড় ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ইস্যুতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের যথাযথ মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। যদিও জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের কোনো অবদান নেই, তারপরও বাংলাদেশ অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ।’ জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময় এবং সহযোগিতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিশ্ব সম্প্রদায় জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সবার জন্য শিক্ষা ও সব সুবিধা সরবরাহের মাধ্যমে মানুষের মধ্যকার বৈষম্য এবং পরিবেশ নিশ্চিত করার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না।’ Related posts:করোনায় আরও ১০২ জনের মৃত্যুডজনখানেক মামলা হবে, গ্রেপ্তার দেখানো হবে মির্জা ফখরুলকেবাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না চীন: রাষ্ট্রদূত Post Views: ২০৭ SHARES জাতীয় বিষয়: