ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে হুমকির মুখে ছয় গ্রাম

প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩০, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : শেরপুর সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের দুই পাশেই চর। কোনো পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় প্রতিবছরই এখানে ভাঙন দেখা দেয়। এতে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা। সদর উপজেলার চরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে অন্তত ছয় গ্রামের ফসলি জমি, মসজিদ ও বাড়িঘর।
উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চুনিয়ারচর, ভাগলগড়, জঙ্গলদি, বেপারীপাড়া, ডাকপাড়া, কামারেরচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর চরসহ ছয়টি গ্রামের অনেকেই এরই মধ্যে বাড়িঘর সরিয়ে অন্য স্থানে চলে গেছেন। ভাঙন অব্যাহত থাকলে চুনিয়ারচর গ্রামের তিনটি মসজিদ ও মাদ্রাসাও নদীগর্ভে চলে যাবে। গ্রামবাসীর আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে চুনিয়ারচরসহ ছয়টি গ্রামই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয়রা জানান, শেরপুর সদর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের দুই পাশেই চর রয়েছে। কোনো পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় প্রতিবছরই এখানে ভাঙন দেখা দেয়। এতে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা।
তারা আরও জানান, চলতি বছরও বর্ষার শুরুতেই এখানে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের একরের পর একর ক্ষেত। এমনিতে করোনার কারণে লকডাউনে এলাকাবাসী দুর্ভোগে রয়েছেন। এখন নদীভাঙন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভাগলগড়ের আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পাশে নদী ভাঙতাছে, কারণ জামালপুরের পাশে নদীতে বাঁধ দিয়েছে। তাই এহন নদী ভেঙে ভেঙে আমাগোর দেহি আইতাছে। আমাগোর মসজিদ, স্কুল, বাড়ি সবই এহন নদী নিয়ে যাবোগা। এহন আমরা কী করুম?’
চুনিয়ারচর গ্রামের জামাল মিয়া বলেন, ‘দুই বছর অয় আমি নয়া বাড়ি করছি। কত কষ্ট কইরা বাড়ি করছি, এহন বাড়িডাও ভাইঙা যাবার নিছে। আমার ১০ কাঠা জমির বেগুনের ক্ষেত ভাইঙা নদীয়ে নিছেগা।’
জঙ্গলদির জমেলা বেওয়া জানান, তারা গরিব মানুষ। তাদের পাঁচ কাঠা জমি ছিল। ভাঙনে সেই জমি নদীর ভেতরে চলে গেছে। তারা এখন কী করে খাবেন।
চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকবর আলী জানান, ভাঙনে এরই মধ্যে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে গেছে। এখনই সরকারিভাবে ব্যবস্থা না নিলে এলাকাবাসীকে বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যাবে না।
ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ বলেন, ‘আমি ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে এখানে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি। আমি নিজেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।’