শেরপুরে আদালতের নির্দেশে কবর থেকে ওঠানো হলো সাঈদের মরদেহ

প্রকাশিত: ৪:৫২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০২১

শেরপুরে পরিবারের সংবাদ সম্মেলনের পরদিন কবর থেকে তোলা হলো মেধাবী ছাত্র আবু সাঈদের (৩০) লাশ। ১ সেপ্টেম্বর বুধবার বেলা ১১টায় লাশ ডেপুটি নেজারত কালেক্টর (এনডিসি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ওই মরদেহ উত্তোলন করা হয়। নিহত আবু সাঈদ (৩০) শেরপুর সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের শালচূড়া গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে।
তার পরিবারের অভিযোগ, সাঈদের বন্ধু (আসামি) মো. আতিক মিয়া (৩০), জাকির (২৮), তরিকুল ইসলাম (৩০), ডা. সোয়েব (২৭), শারমীন সুলতানা ডেইজি (২৫), জুলি (৩২), মো. আলীম মিয়া (৪০)-সহ অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় নির্মমভাবে হত্যা করেন। পরে ওই হত্যাকাণ্ডকে তারা সুকৌশলে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিয়েছেন ।

ঘটনার দিন তারা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি না করে তাকে অনেক দেরি করে ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখানে সাঈদকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর সাঈদের বন্ধুরা তার লাশ বিনা ময়না তদন্তে দাফনের জন্য তাড়াহুড়ো করেন। তখনই এ বিষয়গুলো সাঈদের পরিবারের সন্দেহ হয়।
এরপর গত ২৭ জুন সিআর আমলি আদালতে মামলা করা হলে ২২ আগস্ট শেরপুর সদর থানায় মামলাটি এজাহারভুক্ত হয়। মামলা করার পর আসামিরা বিভিন্নভাবে প্রভাব খাটিয়ে হত্যার ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের বোন। এ ছাড়া মামলা তুলে নিতে সাঈদের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে জানাই পরিবার। এ ঘটনার পর সাঈদের পরিবার লাশের ময়না তদন্ত করার দাবি জানালে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী একরাল মিয়া বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল। কারণ, একই এলাকার মৃত কুদর আলীর মেয়ে শারমিন সুলতানা ডেইজির সঙ্গে সাঈদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এটি শারমিনের আত্মীয়স্বজন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। এরপর তারা বিভিন্ন সময় আবু সাঈদকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ জুন রাতে সাঈদকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। পরবর্তী সময়ে সেটিকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়।
সাঈদের চাচা খাইরুল ইসলাম বলেন, সাঈদের জানাজার আগে তার মরদেহ আমি গোসল করিয়েছি। সাঈদের শরীরের কোথাও কোনো আঘাত ছিল না। মাথার আঘাত দেখে আমার যেটা মনে হয়েছে। তাকে কোনো ভারী হাতুড়ি বা রড দিয়ে পেছন থেকে আঘাত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরপুর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুবেল মিয়া বলেন, মরদেহ উত্তোলনের সময় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। এ ছাড়া নিহত সাঈদের পরিবারের পক্ষে তার বোন তানজিলা কবর ও মরদেহ শনাক্তে সহযোগিতা করেছেন।
এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান জানান, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে আবু সাঈদের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। সুরতাহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এরপর মরদেহের ময়না তদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট এলে আদালত সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।