মেসিকে ছাড়াও সেই ৮-২ এর প্রতিশোধের স্বপ্ন বার্সার

প্রকাশিত: ১০:১১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১

লিওনেল মেসি নেই। তাতে বড় ভরসার জায়গাটাও শেষ হয়ে গেছে বার্সেলোনার। তবে অধিনায়ক সার্জিও বুসকেটস সমর্থকদের স্বপ্ন দেখালেন ধ্বংসস্তুপ থেকে ফিনিক্স পাখি হয়ে ওঠার। কোচ রোনাল্ড কোম্যান অবশ্য দলকে বাস্তবতা মনে করিয়ে দিলেন যেন।
তবে মেসি-হীন যুগের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচটাতেই বার্সেলোনা সামনে পড়ে যাচ্ছে বায়ার্ন মিউনিখের। যাদের কাছে সবশেষ দেখায় ৮-২ গোলে হেরে লজ্জার মুখে পড়েছিল দলটা। সেই ম্যাচের ফলাফল এখনো বার্সার খেলোয়াড়-সমর্থকদের মনে তরতাজা। নতুন যুগের প্রথম ম্যাচে তাই ঘুরে ফিরেই এলো সেই স্মৃতি। কোচ কোম্যানের কণ্ঠে যে স্মৃতি বদলে দেওয়ার প্রত্যয়ই ঝরে পড়ল বটে।

‘এস্তাদিও দে লুজ’ পর্তুগিজ ভাষার এই শব্দগুচ্ছের বাংলা করলে দাঁড়ায় আলোর মাঠ। অথচ সে মাঠটাই যেন কী অদ্ভুত বৈপরীত্য নিয়ে হাজির হয়েছিল বার্সার দুয়ারে। বায়ার্নের সামনে সেবার অসহায় ছিল বার্সেলোনা, গুণে গুণে হজম করেছিল আট গোল। ‘আলোর মাঠ’-এ নজিরবিহীন সেই হার আদিগন্ত বিস্তৃত আঁধারই উপহার দিয়েছিল কাতালানদের, বৈপরীত্য নয়তো কী?
সে হারটা এখনো পোড়ায় দলকে, কোচ কোম্যানকেও কি নয়? তিনি নিজেও তো ছিলেন বার্সেলোনার খেলোয়াড়, ভক্তও। নেদারল্যান্ডসের কোচের চাকরি যখন নিচ্ছেন, সে চুক্তিতে বলেই দিয়েছিলেন, বার্সেলোনা ডাকলেই যেতে দিতে হবে তাকে। সে ডাকটা যখন এলো, দল তখন রীতিমতো নাজেহাল, সেই বায়ার্নের কাছে হারের পর থেকেই।
বার্সা কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো সেই বায়ার্নেরই মুখোমুখি হচ্ছে কোম্যানের দল। এর আগে ঘুরেফিরে এলো সেই ম্যাচের প্রসঙ্গ, তাতে কোম্যানের কণ্ঠে ঝরে পড়ল দৃশ্যপটটা বদলে দেওয়ার প্রত্যয়।
সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘প্রতিশোধ? আমরা এক বছর আগের একটা ঘটনার কথা বলছি। দলে এখনো কিছু খেলোয়াড় আছে যারা সে রাতেও দলে ছিল। সেটা এমন স্মৃতি, যেটা আমাদের মনে থাকবেই। সম্ভবত আমরা সে দৃশ্যটা পাল্টে দিতে পারব।’
কীভাবে? দলের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা লিওনেল মেসি নেই। আক্রমণভাগ ভুগছে চোট নিয়ে। এরপরও? কোচ কোম্যান অবশ্য থাকছেন আশাবাদীদের দলেই। তবে তার আগে একটা শর্তও দিয়ে দিলেন দলকে। বললেন, ‘আমাদের অনেক বেশি শক্তিশালী হতে হবে, আর বায়ার্নের ক্ষতি করার চেষ্টা করতে হবে। সেটা করার জন্য আমার একটা শক্তিশালী দল আছে, বেশ কিছু ভালো খেলোয়াড় আছে।’
কাজটা সহজ নয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এ পর্যন্ত দুই দলের লড়াই হয়েছে নয় বার, যার ছয়বারই শেষ হাসি হেসেছে বায়ার্ন। যার মধ্যে সবশেষ ৮-২ তো আছেই, আছে ৪-০, ৩-০ ব্যবধানের জয়ও। এর বিপরিতে বার্সা জিতেছে মোটে দুই ম্যাচে। ইতিহাস তাই অনেকটাই পিছিয়ে রাখবে বার্সাকে।
ইতিহাস অবশ্য আশাও দেখাচ্ছে বার্সাকে। চলতি শতাব্দীতে যে নিজেদের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে কখনো হারেনি ব্লাউগ্রানারা! সবশেষ হেরেছে যেবার, সেই ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে সেবার অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে এই বায়ার্নের কাছেই হেরেছিল দলটি।
এদিকে জার্মানদের এগিয়ে রাখছে তাদের অ্যাওয়ে ফর্মও। সবশেষ ১৮টি অ্যাওয়ে ম্যাচে হার নেই তাদের। জিতেছে ১৪ ম্যাচে, ড্র করেছে চারটিতে। এমন দলের বিপক্ষে কাজটা যে সহজ নয়, তা দলও জানে। কিন্তু বার্সেলোনা যে সে কঠিনেরেই বেসেছে ভালো। অধিনায়ক সার্জিও বুসকেটস বললেন, ‘আমরা জানি, কাজটা কেমন কঠিন হবে। কিন্তু আমরা এই দল নিয়ে বেশ উচ্চাকাঙ্ক্ষী, কেন হবো না আমরা?’