সীমা‌ন্তে হা‌তি হত্যায় শেরপুরে এই প্রথম মামলা

প্রকাশিত: ৭:৪৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০২১

শেরপুর সীমা‌ন্তে হা‌তি আর মানু‌ষের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। একদি‌কে যেমন হা‌তির আক্রম‌ণে মারা যা‌চ্ছে মানুষ। অন‌্যদি‌কে মানু‌ষের আক্রম‌ণেও মারা যা‌চ্ছে বন‌্য হা‌তি। ফসল রক্ষা‌র্থে গত ৯ নভেম্বর শ্রীবরদী উপ‌জেলার মালা‌কোচা এলাকায় সোনাঝুঁড়ির এক টিলায় জেনা‌রেট‌রের মাধ‌্যমে বিদ্যুতের লাইন তৈ‌রি ক‌রে জিআই তারে সং‌যোগ দেয় স্থানীয় কৃষকরা। রা‌তে খাবার সন্ধা‌নে এলে বিদ‌্যুৎপৃষ্ট হ‌য়ে মারা যায় এক‌টি বন‌্য হাতি। এই ঘটনায় এবারই প্রথম জেলায় হাতি হত্যার মামলা করেছে বন বিভাগ। বন বিভা‌গের পক্ষ থে‌কে গত ১১ নভেম্বর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২’এ চারজনের নামে এই মামলা করা হয়। মামলায় আসামী করা হ‌য়ে‌ছে মালাকোচা এলাকার দুই ভাই আমেজ উদ্দিন ও সমেজ উদ্দিন এবং মো. আশরাফুল ও মো. শাহজালালকে।

বালিজু‌ড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা ও মামলার বাদী রবিউল ইসলাম বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) দুপু‌রে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ব‌লেন, নির্বিচারে বনভূমি দখল করে চাষাবাদ করায় হাতি লোকালয়ে এসে পড়ছে। আমরা অনেক চেষ্টা করেও কোনো সমাধান করতে পারছি না। হাতি হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শেরপুরে এই প্রথম মামলা করা হ‌য়ে‌ছে। প্রথমে শ্রীবরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরে ১২ নভেম্বর বালিজু‌ড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বাদী হ‌য়ে চারজনের নাম উল্লেখ ক‌রে আদাল‌তে এক‌টি মামলা দা‌য়ের করে।
এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের ট্রেইনার আদনান আসিফ বলেন, ২০-৩০ বছর আগে গারো পাহাড় বিরাট এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ছিল। ধীরে ধীরে তা সংকুচিত হয়ে এসেছে। অবশিষ্ট আছে শুধু হাতি। মানুষ এই বনে অনুপ্রবেশকারী। অনুপ্রবেশকারীদের আধিক্যের কারণে পাহাড়ে বন্যপ্রাণীদের খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ বন্যপ্রাণী এলাকা থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
শ্রীবরদী থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার বিশ্বাস ব‌লেন, আদাল‌তের কাগজ পাওয়া মাত্রই আদাল‌তের নি‌র্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব‌্যবস্থা গ্রহণ করা হ‌বে।
প্রসঙ্গত, গত দুই দশকে হাতির আক্রমণে নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। আহত হয়ে পঙ্গু হয়ে গেছেন শতাধিক। বাড়িঘর, ফসল, গাছপালার ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কয়েক কোটি টাকার ওপরে। একই সময়ে নানা কারণে মারা গেছে প্রায় ২৫টি হাতি।